
চাঁদপুরে তেরো বছর পর ডাকাতিসহ হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। এর মধ্যে আবুল কাশেমকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তার উভয়দণ্ড একই সময়ে কার্যকর হবে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ রায় দেন চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শাহরাস্তি উপজেলার খেড়িহর পূর্ব পাড়ার মুজিবুর রহমান। যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছেন আবুল কাশেম, আনোয়ার হোসেন, মাহবুবুর রহমান ও কামাল। এদের মধ্যে কামালের বাড়ি কুমিল্লায়, বাকিরা খেড়িহর গ্রামের বাসিন্দা। রায়ের সময় আসামি মাহবুবুর রহমান ও কামাল আদালতে উপস্থিত থাকলেও অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ জানুয়ারি রাত আনুমানিক দেড়টায় উপজেলার খেড়িহর গ্রামের মো. ফারুকের বসতঘরে একদল মুখোশধারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করতে আসে। ওই সময় ঘরে থাকা লোকজন চিৎকার শুরু করে। এক পর্যায়ের পবিারের সদস্য বুদরুছ আলী ঘরের দরজা খুলে বের হলে ডাকাতরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে ডাকাতরা ঘরে প্রবেশ করে সোনার অলংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বুদরুছের ছেলে তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় ৩৯৬ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার তৎকালীন সময়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. নুরুল আফসার উল্লেখিত আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে ২০০৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্যাহ বলেন, মামলায় প্রথমে আসামি ৬ জন থাকলেও আবুল খায়ের নামে একজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর চলমান অবস্থায় ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক ৩৯৬ ও ৪১২ ধারায় আসামিদের পৃথক সাজায় দণ্ডিত করেন।
সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. সেলিম আকবর, অ্যাড. আনেয়ার গাজী, অ্যাড. রাজেশ মুখার্জি।