আজ : বুধবার ║ ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বুধবার ║ ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে র‌্যাব-৭ এর অভিযানে ১ কোটি টাকা মূল্যের ৯৭৫ গ্রাম “ক্রিস্টাল মেথ (আইস)” উদ্ধারসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, র্দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
১৮৮৭ সালে জার্মানিতে মারাত্মক সব ড্রাগের ওপর গবেষণা করতে গিয়ে আবিষ্কৃত হয় ক্রিস্টাল ড্রাগ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিমান চালক ও সৈনিকদের সারাক্ষণ নির্ঘুম রাখতে জার্মান ও জাপানিজ পাইলটদের উক্ত কড়া ড্রাগ ব্যবহারে উৎসাহিত করা হত। পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তিত হয়ে কোথাও ক্রিস্টাল মেথ, আইস, এক্সটেসি, ম্যাড-ড্রাগ এবং এলাকাভেদে নানা ছদ্মনামে এর ব্যবহার চালু হয়। ১৯৭০ সালে আমেরিকাতে ক্রিস্টাল মেথ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়া হয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, লাওস, চীন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশে এর ব্যবহার শুরু হয়। ক্রিস্টাল মেথ বা আইস উন্নত পদ্ধতিতে প্রসেস করা হয় বলে এটি অতি উচ্চমাত্রার একটি মাদক। ফলে এটি সেবনে অনিদ্রা ও অতি উত্তেজনা তৈরি হয়। এর ফলে স্মৃতিভ্রম ও মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি, লিভার নষ্ট হয়। দাঁত ক্ষয়, অতিরিক্ত ঘাম, চুলকানি, রাগ ও আত্মহত্যার মত ভয়ানক প্রবণতাও তৈরি হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং তারিখ র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল খুলশী থেকে ১৪০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) সহ দুইজনকে আটক করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা নতুন ফিসারী ঘাট এলাকায় মাদকের একটি বড় চালান আদান প্রদান করবে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ১২ জুলাই ২০২১ ইং তারিখ ১৭৩০ ঘটিকায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনজন ব্যক্তি ০১ টি মোটরসাইকেল ফেলে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে আসামি ১। শহিদুল ইসলাম টিপু (২৮), পিতা- মোঃ মুছা, সাং- পূর্ব বাতুয়া, থানা-পটিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম , ২। কাজী আমিনুর রশিদ (৪৮), পিতা-মৃত কাজী মাহমুদুল হক, সাং- বাতুয়া, থানা-পটিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে- এয়াকুব নগর, ফিরিঙ্গী বাজার, থানা- কোতয়ালী, সিএমপি, চট্টগ্রাম এবং ৩। মোঃ সাইমন তারেক (৪৯), পিতা- মৃত হাজী নুর আলম, সাং- গুজরা, নোয়াপাড়া, থানা-রাউজান, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে- এয়াকুব নগর, নুর আলমের বিল্ডিং, ফিরিঙ্গী বাজার, থানা-কোতয়ালী, সিএমপি, চট্টগ্রাম মহানগরীদেরকে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেখানো ও শনাক্ত মতে তাদের হেফাজতে থাকা একটি ব্যাগ তল্লাশি করে ৯৭৫ গ্রাম মেথামফিটামিন উপাদানযুক্ত দানাদার মাদকদ্রব্য, যার বানিজ্যিক নাম আইস (ক্রিস্টাল মেথ) উদ্ধারসহ আসামিদের গ্রেফতার করে এবং উক্ত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরোও জানা যায়, তারা দীর্ঘ দিন যাবৎ একে অপরের সহযোগিতায় ও পরস্পর যোগ-সাজশে চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট নেশাজাতীয় মাদকদ্রব্য আইস (ক্রিস্টাল মেথ) ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে। আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা রুবেল (৩২), পিতা- আব্দুল গফুর, সাং- মধ্যম বাতুয়া, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম এর নিকট হতে উক্ত মাদকদ্রব্য নিয়েছিল। রুবেল মাছ ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে উক্ত মাদকদ্রব্য এনেছিল। অতঃপর মাদক ব্যবসায়ী রুবেল সৌদি আরব চলে গিয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদক আইসের আনুমানিক মূল্য ০১ কোটি টাকা। গ্রেফতারকৃত আসামি ও উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর ৩৬(১) এর সারণি ১০(গ)/৪১ ধারায় চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতয়ালী থানায় মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মাদকমুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে মাদকের বিরুদ্ধে র‌্যাবের চলমান সাড়াশি অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ