আজ : শুক্রবার ║ ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শুক্রবার ║ ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১১ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

না ফেরার দেশে চলে গেল প্রণব মুখার্জি

চলে গেলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ‘ভারতরত্ন’ প্রণব মুখার্জি। ৮৪ বছর বয়সে দিল্লির সেনা হাসপাতালে আজ সোমবার বিকেলে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। প্রণব মুখার্জির পুত্র সাবেক সাংসদ কংগ্রেস নেতা অভিজিৎ প্রথম তাঁর মুত্যু সংবাদ জানান।

ভারতের রাজনীতিতে যে কয়েকজন মানুষ রাজনৈতিক সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন, প্রণব ছিলেন তাঁদের অন্যতম। বহু রাজনৈতিক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে সমকালীন ভারতের রাজনীতিতে তিনি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মহীরুহ ন্যায়। দল মত নির্বিশেষে অজাতশত্রু ভদ্রলোক রাজনীতিকদের কাতারে সম্ভবত তিনিই ছিলেন শেষ ব্যক্তিত্ব। দল ভুলে রং ভুলে সবাই তাঁর কাছে যেতেন রাজনৈতিক সঙ্কটমোচনের পরামর্শ নিতে। তাঁর মৃত্যুতে একটা যুগের অবসান ঘটল।

১০ আগস্ট নয়াদিল্লির রাজাজি মার্গের সরকারি বাসভবনে কলঘরে পড়ে গিয়ে প্রণব মুখার্জি মাথায় আঘাত পান। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সেনা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। চিকিৎসায় সাড়া দিলেও সেই থেকে তিনি কোমায় চলে যান। ক্রমেই তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ লড়াই করার পর সোমবার তিনি হার স্বীকার করেন।

প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, দেশের উন্নয়নের চালচিত্রে তাঁর অবদান কেউ মুছে দিতে পারবে না। প্রণব মুখার্জি ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, পরামর্শদাতা। ২০১৫ সালে প্রণব মুখার্জির স্ত্রী শুভ্রার মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লি এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইন্দিরা গান্ধীর সাহচর্যে দিল্লিতে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু ১৯৬৯ সালে। পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, যোজনা কমিশনের দায়িত্ব পালন করেছেন যোগ্যতার সঙ্গে। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর রাজীব গান্ধীর মন্ত্রিসভায় স্থান না পেয়ে হতাশ প্রণব কংগ্রেস ত্যাগ করে নতুন দল গঠন করেছিলেন।

পরবর্তীতে ‘ভুল’ বুঝতে পেরে তিনি সেই দল তুলে দিয়ে কংগ্রেসে ফিরে আসেন। সেই থেকে আর তাঁকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে না পারাটা তাঁর একটা খেদ ছিল। কিন্তু সে জন্য দলকে সুপরামর্শ দিতে কখনো পেছু হটেননি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দশ বছরের রাজত্বকালে একটা সময় তাই তাঁকে ৫২টি মন্ত্রিগোষ্ঠী চালাতে হয়েছিল। সাধারণ এক বঙ্গসন্তান হিসেবে জন্ম নিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়া এবং সর্ব মহলের সম্মান অর্জন করা প্রণব মুখার্জির জীবন ছিল যেন এক ইচ্ছাপুরণের কাহিনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ