অধিক পরিমাণে ধান উৎপাদনের জেলা দিনাজপুরে হঠাৎ করেই বেড়েছে চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি চালের দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত। ৫০ কেজির বস্তা প্রতি বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষরা। মিল মালিকরা চালের দাম বৃদ্ধি করায় বাজারে চালের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তবে মিল মালিকরা বলছেন, বাজারে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই বেড়েছে চালের দাম।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দিনাজপুরের বাহাদুর বাজারের এনএ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, বিআর আঠাশ জাতের চাল কেজি ৩৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এই জাতের চাল এক সপ্তাহ আগে ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে মিনিকেট চাল ৪৪ থেকে ৪৮, গুটি স্বর্ণ ২৯ থেকে ৩২, বিআর উনত্রিশ জাতের চাল ৩৫ থেকে ৩৮, নাজিরশাইল ৫০ থেকে ৫৪, কাঠারী ৭৪ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাল কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসের একবার চালের দাম বেড়েছে। আবার ফেব্রুয়ারিতে চালের দাম বাড়লো। প্রতিমাসে এভাবে চালের দাম বাড়লে আমরা খাবো কী।’
চাল ক্রয় করতে আসা শরিফা বেগম বলেন, ‘গত সপ্তাহেই মিনিকেট চাল ছিল ৪৩ টাকা কেজি, আর আজকে ৪৮ টাকা কেজি। এক কেজি চালে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। এর আগেও বেড়েছিল ৩ টাকা। একমাসে এক কেজিতে ৮ টাকা বেড়েছে। এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
বাহাদুরবাজার এনএ মার্কেটের চাল ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আসলে আমাদের করার কিছু থাকে না, মিল মালিকদের কাছ থেকে যে দামে চাল ক্রয় করি তার কিছুটা লাভ রেখেই বিক্রি করি। চালের বাজারমূল্য নির্ভর করে সম্পূর্ণ মিল মালিকদের ওপর।’
চাল ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আলাল বলেন, ‘কিছু মিল মালিক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের বাজার অস্থিতিশীল করে রেখেছে। এই আমন মৌসুমে মিনিকেট, আঠাশ জাতের চালের দাম বৃদ্ধি হওয়ার কোনও কারণ নেই। এখন কৃষকের ঘরে ধান নেই, তবে মিল মালিকরা পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ করেছে। কৃষকরা দাম বাড়ায়নি, মিল মালিকরা দাম বাড়িয়েছে।’
বাংলাদেশ মেজর, অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শহীদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম বেড়েছে। কৃষক বাঁচানোর জন্য চালের মূল্য আরও বৃদ্ধি করা উচিত। তাছাড়া মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এখন এক কাপ চা খেতে লাগে ৬ টাকা। সেক্ষেত্রে চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়েছে। এটা কোনও বিষয় নয়