
সাতকানিয়ায় জামায়াত সেক্রেটারী মিয়া গোলাম পরওয়ার
মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সাতকানিয়া থেকে:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এম.পি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের মত স্থানীয় নির্বাচনও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হওয়া উচিৎ। বর্তমানে প্রান্তিক জনগণের সেবা দানের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি খুব জরুরী। তাই বর্তমান ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিৎ।
তিনি শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে চট্টগ্রাম – ১৫ (সাতকানিয়া – লোহাগাড়া) সংসদীয় আসনের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সর্বস্তরের দায়িত্বশীল সমাবেশে একথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার উদ্যোগে সাতকানিয়া সী ওয়ার্ল্ড কমপ্লেক্সে দক্ষিণ জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের দুজন কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল যথাক্রমে মাওলানা আব্দুল হালিম ও মাওলানা শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ভূইয়াঁ ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য জাফর সাদেক।
আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ ইসহাক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি আসিফুল্লাহ মুহাম্মদ আরমান, লোহাগাড়া উপজেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদী, সাতকানিয়া উপজেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা কামাল উদ্দীন, সাতকানিয়া পৌরসভা আমীর অধ্যক্ষ হামিদ উদ্দিন প্রমূখ।
সমাবেশে সাতকানিয়া – লোহাগাড়া আসন হতে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাবেক এম. পি, দলের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী শাখার আমীর এবং সাবেক দলীয় হুইপ ও প্যানেল স্পীকার আলহাজ শাহজাহান চৌধুরীকে আগামী নির্বাচনে এ আসনের দলীয় প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।
গোলাম পরোয়ার বলেন, রক্তঝরা আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসরেরা বহুমুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বিভিন্ন মহলকে উস্কে দিয়ে এই দাবী সেই দাবীর নাম করে বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। তারা সংস্কার এবং বিচার বাঁধাগ্রস্থ করতে চায়। কিন্তু সংস্কার এবং বিচার কার্য সম্পন্ন ছাড়াই যেনতেনভাবে একটা নির্বাচন হয়ে গেলে জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। যারা বলছেন ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবেন তারা ভুল বলছেন। কারণ নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো দলীয় সরকারের অধীনে পরিপূর্ণ সংস্কার সম্ভব নয়। তাড়াহুড়ো করে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে নতুন হাসিনার জন্ম নিবে।
তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ভালো সময়ে জাতীয় নির্বাচনের ডেটলাইন ঘোষণা করেছেন। আমরা ইন্টেরিম সরকারকে এই সময়টা দিতে চাই। সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই। তবে এর আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিৎ। তিনি সকল দলের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সকলে দলের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বেশী প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করি।
মিয়া গোলাম পরোয়ার আরো বলেন, হাসিনা মূলত প্রধান দুটো কারণে ইতিহাসের আস্তাকূঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। প্রথমত সে চরম কতৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠেছিল। দ্বিতীয়ত সে দিল্লীর প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ ও ইসলাম বিরোধী কর্মসূচী বাস্তবায়নের ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছিল। সে দিল্লীর নির্দেশে ওলামা মশায়েখকে জুলুম করেছে। ইসলামী আন্দোলনের রাহবারদেরকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। আগামীতেও কেউ ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠলে জাতি সমুচিৎ শিক্ষা দেবে।
তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী ইসলামী জোট গঠনের চেষ্টা চলছে। আল্লাহ সহায় হলে এ প্রচেষ্টা ভাল ফল বয়ে আনবে ইন শা আল্লাহ। ঐক্যের স্বার্থে জামায়াত সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুুত বলেও তিনি ঘোষণা করেন।