
দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির উদ্যোগে “কর্ণফুলী নদী বাঁচলে চট্টগ্রাম বাঁচবে” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে নিয়ে এক আলোচনা সভা ৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। কর্ণফুলী নদীকে রক্ষা ও কর্ণফুলী নদীর ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সভায় বক্তারা বলেছেন, কর্ণফুলী নদী বাঁচলে চট্টগ্রাম বাঁচবে, আর চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। কর্ণফুলী নদীকে দূষণ ও দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সম্প্রতি নাসার বিজ্ঞানীদের অভিমত অনুসারে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরী গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যাবে! বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্র ও নদীপৃষ্ট উঁচু হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে নদী ভরাট ও নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংসের ফলে চট্টগ্রামের উপর এই মহাবিপদ ঘনিয়ে আসছে। আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশের সাথে বিমাতাসূলভ আচরণ করছি। ধ্বংস করছি পাহাড় ও বনাঞ্চল। বৃক্ষ নিধন সবুজ অরণ্য ধ্বংস করছি প্রতিদিন। স্রষ্টার অপরূপ সৃষ্টি নদ-নদীগুলোকে হত্যা করছি ইচ্ছামত। কেউ যেন দেখার নেই। সভায় বক্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, চট্টগ্রামের মৃতপ্রায় নদ-নদীগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা গেলে ও মারাত্মক দূষনের হাত থেকে নদীগুলোকে রক্ষা করা না গেলে চট্টগ্রাম বাঁচবে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর সহ এই বাণিজ্যিক নগরী পরিবেশে নষ্টের কারণে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসবে। সভায় বক্তারা আরো বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরী একটি কারণে-অকারণে যানজটের নগরীতে পরিণত হচ্ছে। পুনরায় কালুরঘাট ব্রীজ থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সাধারণ মানুষ গাড়ি যোগে যাতায়াত করতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ নদী পথে পুরাতন কালুরঘাট ব্রীজ থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যেতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট যথেষ্ট সময়। বক্তারা বলেছেন, ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর ন্যায়ে চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীকে পুরাতন কালুরঘাট ব্রীজ থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সী-বাস সার্ভিস চালু করনের মাধ্যমে নদী পথের যাতায়াত সহজীকরণ ও নদী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও পানিসম্পদ মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান সাংবাদিক এ.কে.এম. আবু ইউসুফ এর সভাপতিত্বে এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও পরিবেশ উন্নয়ন সংগঠক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাট্যজন ভাস্কর ডি কে দাশ মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতিহাস গবেষক সোহেল মুহাম্মদ ফখরুদ-দীন, মানবাধিকার সংগঠন আসক এর চট্টগ্রাম জেলার সহ-সভাপতি এম ওসমান গণি, অধ্যক্ষ হাকিম শিহাব উদ্দিন চৌধুরী, লেখক এস এম ওসমান, সমাজসেবক মকসুদুল আলম, আবদুর রহিম, মিজবাহুর আলিম, নুরু মিয়া, আমির হোসেন, শোয়েব মিয়া, তজুর মুল্লুক মাঝি, আবদুল করিম, মোহাম্মদ শফি প্রমুখ।