সিঙ্গাপুরে আরও দুজন বাংলাদেশির শরীরে নতুন করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ( আইইডিসিআর)।
আজ বৃহস্পতিবার ( ১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, এ নিয়ে মোট চারজন বাংলাদেশি কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে শনাক্ত হয়েছেন। তারা বর্তমানে দেশটির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে দেশটিতে আরও দুই প্রবাসী বাংলাদেশির শরীরে কভিড-১৯ এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়। তাদের একজন আইসিইউ-এ এবং অপরজন সাধারণভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমস’র খবরে বলা হয়েছে, চার বাংলাদেশিই সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটসে কাজ করতেন।
এছাড়াও গতকাল বুধবার আইইডিসিআর এর সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই দুই রোগীর সংস্পর্শে ছিলেন এমন ১৯ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে সিঙ্গাপুর সরকার। এর মধ্যে ১০ জনই বাংলাদেশি।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজ জানায়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া আরও আটজনকে আজ বৃহস্পতিবার শনাক্ত করা হয়েছে। ফলে দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ জনে। নতুন শনাক্ত আট জনের মধ্যে পাঁচ জন গড চার্চের গ্রেস অ্যাসেম্বলির সঙ্গে সম্পর্কিত। এদের মধ্যে একজন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক। অসুস্থবোধ করার পর তিনি সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সংস্পর্শে আসেননি। এই এলাকাটিতে এখন পর্যন্ত সাতজন আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে বুধবার আরও দুজন আক্রান্ত হয়েছিলেন।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজ আরও জানায়, আট জনের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি নাগরিক যারা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সিঙ্গাপুরে কাজ করছেন। তাদের বয়স যথাক্রমে ৩০ ও ৩৭। এই দুজন সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটস এলাকায় কাজ করতেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিচয় প্রকাশ না করে তাদেরকে কেস ৫২ ও ৫৬ বলে আখ্যায়িত করছে।
এই এলাকাতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের সবাই বাংলাদেশি নাগরিক।
কেস ৫২ বলে আখ্যায়িত বাংলাদেশি ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অসুস্থবোধ করছিলেন। বৃহস্পতিবার তার শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ৩৭ বছরের এই ব্যক্তি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়া আগের দুই বাংলাদেশির সংস্পর্শে ছিলেন।
এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর দ্বিতীয় বাংলাদেশি আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায়। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তার শরীরে লক্ষণ ধরা পড়ে। পরের দিন তিনি স্থানীয় জিপি হাসপাতালে যান। সোমবার তাকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশিয়াস ডিজিজেস-এ পাঠানো হয়। হাসপাতালে ভর্তির আগে তিনি ভেরাসামি রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন।
প্রথম আক্রান্ত হওয়া বাংলাদেশিও একই এলাকাতে কাজ করেতেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে প্রথম আক্রান্ত বাংলাদেশি লিটল ইন্ডিয়া’র মুস্তফা সেন্টারে গিয়েছিলেন এবং কাকি বুকিত এলাকার দ্য লিও ডরমিটরিতে অবস্থান করেছেন।
উল্লেখ্য, চীনের হুবেই প্রদেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১০ জনে।