আজ : শনিবার ║ ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শনিবার ║ ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আধ্যাত্মিকতার পুনর্জাগরণেই হবে হেদায়তের বিপ্লব – অধ্যক্ষ ছৈয়্যদ মুনির উল্লাহ্

দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:

আধ্যাত্মিকতার সোনালী পথে মিলে হেদায়তের অমৃত সুধা, দৃষ্টিজুড়ে ভেসে ওঠে রাসূলে খোদা, তবে দূর হয় ইহ-পরকালের সমস্ত দ্বিধা। সুন্নাতে রাসূলের অলঙ্কারে হয় জীবনের সবটুকু অলঙ্কৃত, আখেরাতে হবে খোদায়ীভাবে পুরস্কৃত। এভাবে অর্জিত হবে আশরাফুল মাখলুকাতের সত্যিকারের স্বীকৃতি, সৃষ্টিজুড়ে সূচিত হয় মানবতা প্রতিষ্ঠার অনুভূতি।
১৪ জানুয়ারি সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি ময়দানে ঐতিহাসিক গাউছুল আজম কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, নবুয়তের আলোকে হেদায়তের সুরভি ছড়ানো যে সকল মহামনীষী ধরণীতে এসেছেন, কালের পরিক্রমায় বারো আউলিয়ার পূণ্যভূমি চট্টলার বুকে আমরা পেয়েছি তেমনি একজন আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল গাউছুল আজমকে; যিনি সৃষ্টি করেছেন নবী প্রেমের এমন উপাখ্যান যা ইতিহাসে বে-নজির। প্রতিদিন নবীর সাথে যাঁর একবার দেখা হত, কথা হত। শুধু তাই নয়; বেছাল শরীফের পরও তাঁর পবিত্র রওজার দিকে সারি সারি বৃক্ষ বিনয়ে অবনত, যা বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়তের বিরল দৃষ্টান্ত।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ. কে. এম. ছায়েফ উল্ল্যাহ, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন মহাসচিব ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হযরতুলহাজ্ব অধ্যক্ষ আল্লামা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম তালুকদার, রাউজান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, চবি আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জালাল আহমদ, সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সরকার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মুহাম্মদ সাহেদ ইকবাল বাবু, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বোর্ড সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন শাহ, এলবিয়ন গ্রুপের প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব মোঃ নেজাম উদ্দীন, মদিনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু মোহাম্মদ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট লায়ন এস. এম. মোরশেদ হোসাইন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌং।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, গাউছুল আজমের প্রতিনিধি হিসাবে কাগতিয়া দরবারের মোর্শেদে আজম দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যে দৃশ্যমান কর্মযজ্ঞ দেখিয়ে চলেছেন তা উপমাবিহীন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বেও এ দরবারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আবুল মনছুর বলেন, আদর্শ সমাজ গঠনে প্রয়োজন ছাত্র ও যুব সমাজের নৈতিকতার উন্নয়ন। এক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক অগ্রদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন কাগতিয়া দরবারের মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
চেম্বার সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম তালুকদার বলেন, এমন একটা সময়ে যুগের শ্রেষ্ঠ সংস্কারক হিসেবে আবির্ভূত হয়ে বিপদগামী যুবকদের আলোর পথ দেখিয়েছেন যা হাজার বছরের ইতিহাসে হেদায়তের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
প্রফেসর এ. কে. এম. ছায়েফ উল্ল্যা বলেন, পথহারা যুব সমাজের কাঙ্খিত নেতৃত্ব দেওয়ার সত্যিকারে রাহবার হলেন গাউছুল আজম। যার পরশে এসে লাখ লাখ যুবক সুপথের সন্ধান পেয়েছে যা শান্তিময় স্বদেশ গড়ার পক্ষে অনন্য নজির।
এহছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল বলেন, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর সংস্পর্শে এসে রাউজানের যুব সম্প্রদায় আজ মাদকের ছোবল মুক্ত। রাউজানকে মডেল ধরে সমগ্র বাংলাদেশে গাউছুল আজমের তরিক্বত পৌছে গেলে এই দেশ হবে শান্তির স্বর্গ।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম হানফি, আল্লামা মুফতি আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, আল্লামা মোহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা বদিউল আলম আহমদী, আল্লামা এমদাদুল হক মুনিরী, আল্লামা মুহাম্মদ সেকান্দর আলী ও আল্লামা মুহাম্মদ ফোরকান প্রমুখ।
কনফারেন্সে যোগদানের উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, সীতাকুন্ড, বোয়ালখালী, আনোয়ারা পটিয়া ছাড়াও রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার-মহেষখালী থেকে দলে দলে গাড়িযোগে কাগতিয়া দরবারের অসংখ্য অনুসারী, ভক্ত ও সাধারণ মুসলমানেরা কনফারেন্সস্থল লালদীঘি ময়দানে আসতে থাকে। চট্টগ্রাম ছাড়াও ফেনী, কুমিল্লা, বি.বাড়িয়া, চাঁদপুর ও ঢাকা থেকেও কাগতিয়া দরবারের হাজার হাজার অনুসারী ও মুসলমানেরা উপস্থিত হন। কনফারেন্সে যোগদানের জন্য শুধু দেশের নয়, বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সৌদিআরব, ওমান, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবী, শারজাহ্ হতেও কাগতিয়া দরবারের শত শত অনুসারী সপ্তাহখানেক পূর্ব থেকে বাংলাদেশে আসেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আলোকসজ্জিত করা হয় এবং চট্টগ্রামের প্রায় সকল প্রবেশমুখে ও বিভিন্ন উপজেলায় উত্তোলন করা হয় তোরণ। মাগরিবের আগেই লালদীঘি ময়দান ও এর আশপাশের এলাকা, সড়ক কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ