আজ : সোমবার ║ ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

যেসব তথ্য ভুলেও এআই চ্যাটবটকে দেবেন না

দেশচিন্তা ডেস্ক: চ্যাটজিপিটি বা অনুরূপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট এখন অনেকের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। ই-মেইল খসড়া করা থেকে শুরু করে তথ্য খোঁজা কিংবা একাকিত্ব কাটাতে আলাপ—সব ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে এ ধরনের চ্যাটবট। মানুষের মতো উত্তর দেওয়ার দক্ষতার কারণে অনেকেই এগুলোকে ভরসাযোগ্য মনে করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এই ভরসার আড়ালেই আছে নানা ঝুঁকি।

তাদের দাবি, চ্যাটবটের সঙ্গে করা আলাপ আসলে একেবারেই গোপন নয়। কারণ, ব্যবহারকারীর দেওয়া তথ্য সংরক্ষণ করা হতে পারে, বিশ্লেষণ করা হতে পারে, এমনকি ভবিষ্যতে ফাঁসও হয়ে যেতে পারে। ফলে কিছু সংবেদনশীল বিষয় কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।

চলুন, জেনে নিই এমন ১০টি বিষয় যা কখনোই চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করবেন না—
১. ব্যক্তিগত তথ্য
আপনার পুরো নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল—এগুলো আলাদা মনে হলেও একত্র করলে সহজেই পরিচয় শনাক্ত করা যায়। এতে প্রতারণা, ফিশিং আক্রমণ বা ট্র্যাকিংয়ের ঝুঁকি তৈরি হয়।

২. গোপন কথা বা স্বীকারোক্তি
অনেকেই একাকিত্বে চ্যাটবটকে মন খুলে বলার চেষ্টা করেন। তবে এআই কোনো বন্ধু বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নয়। আপনি যা বলছেন, তা সংরক্ষিত হতে পারে, পরবর্তীতে প্রশিক্ষণে ব্যবহার হতে পারে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসও হতে পারে। সুতরাং, গোপন কিছু জানাতে চ্যাটবট নয়, বেছে নিন উপযুক্ত মানুষ।

৩. কর্মস্থলের গোপনীয় তথ্য
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন কর্মীদের সতর্ক করছে, কোনোভাবেই ব্যবসায়িক গোপন তথ্য, নথিপত্র বা কৌশল চ্যাটবটে পেস্ট করা যাবে না। অনেক এআই চ্যাটবট ইনপুট ব্যবহার করে নিজেকে আরও উন্নত করে। ফলে আপনার শেয়ার করা তথ্য বাইরে চলে যেতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

৪. আর্থিক তথ্য
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ বা সামাজিক নিরাপত্তা নম্বরের মতো তথ্য সাইবার অপরাধীদের কাছে মূল্যবান। চ্যাটবটে এসব তথ্য দিলে তা চুরি বা অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।

৫. স্বাস্থ্য বা চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য
চ্যাটবটের মাধ্যমে চিকিৎসাবিষয়ক তথ্য জানতে চাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে এআই চিকিৎসক নয়, ভুল তথ্য দিতে পারে। এমনকি আপনার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য যেমন : প্রেসক্রিপশন, চিকিৎসার ইতিহাস বা বিমার তথ্য—শেয়ার করলে তা চুরি হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সর্বদা যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৬. অশ্লীল বা আপত্তিকর বিষয়বস্তু
অনেক চ্যাটবট আপত্তিকর বা অবৈধ বিষয়বস্তু শনাক্ত করে ব্লক করলেও, আপনি যা লিখছেন তা রেকর্ড হয়ে যেতে পারে। যৌন বা অবমাননাকর আলাপ, বেআইনি তথ্য—এসবের কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কাও থাকে।

৭. পাসওয়ার্ড
কোনো চ্যাটবটের সঙ্গেই আপনার পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না, এমনকি কথার ছলে হলেও নয়। এটি আপনার ই-মেইল, ব্যাংক বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো।

৮. আইনি জটিলতা বা মামলা
চুক্তি, মামলা-মোকদ্দমা বা আইনি বিবাদের মতো বিষয়ে চ্যাটবটের পরামর্শ নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। চ্যাটবট কখনোই একজন আইনজীবীর বিকল্প নয় এবং ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারে। আপনি যেসব তথ্য শেয়ার করছেন, সেগুলো ভবিষ্যতে আইনি সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৯. সংবেদনশীল ছবি বা নথি
পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ছবি চ্যাটবটে আপলোড করা থেকে বিরত থাকুন। আপনি ডিলিট করলেও অনেক সময় সেই ফাইলের ডিজিটাল চিহ্ন থেকে যায়। এই ধরনের তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে এবং পরিচয় চুরির মতো বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

১০. যা আপনি অনলাইনে দেখতে চান না
যদি আপনি না চান যে কোনো কিছু ভবিষ্যতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ুক, তাহলে সেটা চ্যাটবটকে বলবেন না। চ্যাটবটের আলাপ অনেক সময় গোপন থাকে না, এমনকি ভবিষ্যতেও ব্যবহার হতে পারে। তাই এআই চ্যাটবটের সঙ্গে আলাপকালে সতর্ক থাকতে হবে।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ