
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকার সাবেক চবিয়ান সংগঠন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
জুলাই মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখনই প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছে, তখনই তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর এমন বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না; আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা জানতে চাই, শিক্ষার্থীদের গ্রামবাসীর মুখোমুখি দাঁড় করালো কারা?
“খেয়াল করলে দেখা যায়, তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল সেই পলাতক ফ্যাসিবাদের দোসর, যারা গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়েছিল যে শিক্ষার্থীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং তাদের প্রতিহত করতে হবে। গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করা হয়েছে, যার ফলে আজ আমাদের শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।”
কালবেলা পত্রিকার সাবেক ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ইউসুফ বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাসে গত তিন দিন ধরে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত হামলা চালাচ্ছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসির ওপরেও হামলা করা হয়েছে। ছাত্রদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদে বসেছেন, আমি তাকে বলতে চাই— চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় আপনার মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। আপনারা মানুষের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আজ কোনো নিরাপত্তা নেই, অথচ প্রশাসন এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নির্বিকার।”
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট রায়হান সুবহান বলেন, “আমরা সরকারের কাছে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। সকাল থেকে যখন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছিল, তখন প্রশাসন কোথায় ছিল? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যে বক্তব্য আমরা দেখেছি, সেটিকে স্রেফ অজুহাত মনে হয়েছে। তারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু যেখানে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে, সেটা কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ছিল না। তাহলে সেখানে কেন তাদের প্রতিহত করা হলো না? আমি একটি কথাই বলতে চাই, চবির ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহ আলম বলেন, “ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে আজ অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। গতকাল সারাদিন ধরে আমার ছাত্রদের ওপর হামলা করা হয়েছে, আমাদের সহকর্মীদের ওপরও আক্রমণ করা হয়েছে। আমি বলতে চাই, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যদি অশান্ত হয়ে যায়, তাহলে সমগ্র বাংলাদেশেও অশান্তি ছড়িয়ে পড়বে। প্রধান উপদেষ্টা, আপনিও এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন। আপনাকে অনুরোধ করব, দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করুন।”