
ফারুকুর রহমান বিনজু, পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের ওপর পুলিশের লাঠি চার্জের ঘটনায় অন্তত ১১ জন ছাত্র আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে পটিয়া শহীদ মিনারে “জুলাই দিবস” উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচির পর এই ঘটনা ঘটে।
কী ঘটেছিল?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, “পটিয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র” ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি শেষ করে ছাত্ররা থানার মোড়ে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংকরকে দেখতে পেয়ে তাকে নিয়ে থানার মাঠে যান। সেখানে তাকে ঘিরে ছাত্ররা স্লোগান দিলে পুলিশ হঠাৎ করেই লাঠি চার্জ করে। ঘটনাস্থল থেকে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
কারা আহত হয়েছেন?
আহতদের মধ্যে রয়েছেন— তৌকির (২১), মো. নাদিম (২১), মো. আয়াস (১৬), মো. আখিল (১৮), মো. ইরফান (১৮), তাসরিয়ান হাসান (১৮), মো. রায়হান (২০), সাইফুল ইসলাম (১৮)
এছাড়াও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। আহতরা পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মোঃ নওশাদ জানান, “রাত প্রায় ১১টার পর ১০–১২ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে আসেন। বেশিরভাগেরই হাতে-পায়ে আঘাত ছিল।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য
আহত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম তৌকির বলেন, “ছাত্রলীগের দীপংকরকে দেখে আমরা তাকে নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলাম। পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম—এই কাজটি শান্তিপূর্ণ, কোনো হুমকি নয়। কিন্তু পুলিশ হঠাৎ করেই আমাদের উপর লাঠি চার্জ করে।”
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক গোলাম মাওলা মাশরাফ বলেন, “পুলিশকে আমরা বলেছি—তারা চাঁদাবাজদের সাহায্য করে, আসামি ধরতে ব্যর্থ হয়। এসব কথা বলায় পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ প্রশাসনকে ‘বট’, ‘২ নম্বর’, ‘ফাও’ হিসেবে ডাকাটা প্রতিবাদী ভাষার অংশ ছিল, কিন্তু পুলিশ তা সহ্য করতে পারেনি।”
পুলিশের অবস্থান
এ বিষয়ে পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জায়েদ মোঃ নাজমুন নূর বলেন, “ছাত্ররা একজন ছাত্রলীগ নেতাকে ধরে এনে থানার সামনে মব গঠন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এতে ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই পুলিশ লাঠি চার্জ করতে বাধ্য হয়।”