আজ : শনিবার ║ ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শনিবার ║ ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১০ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

খরার কারণে বাদাম চাষীদের ভাগ্য বিপর্যয়ের মুখে

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

প্রতি মণ বাদামের বীজ ৯ থেকে ১০ হাজার টাকায় কিনেছিলেন তারা। এরপর সার, চাষ ও জমি তৈরিতে যা ব্যয় হয়েছে তার পুরোটাই লোকসান হতে চলেছে এবার।

পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষগুলো চরের ফসলের ওপর নির্ভরশীল। উন্নত প্রযুক্তির অভাব, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকা এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে গোটা দেশ যখন স্থবির, তখন এই কৃষকরাই দেখাচ্ছিলেন আশা। কিন্তু তাদের স্বপ্ন গুড়িয়ে দিলো খরা।

চরভদ্রাসন এলাকার বাদাম চাষি পাননু মোল্লা জানান, ‘আমার তিন বিঘা জমির বাদাম পুড়ে শেষ। ৫০ হাজার টাকা খরচ করে বাদাম লাগিয়েছিলাম। এখন কিছুই নেই।’

বাদাম চাষি অভি খালাসীর স্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরও প্রায় ৪ বিঘা জমির বাদাম পুড়ে গেছে।’

সরেজমিনে বাদাম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায় প্রায় অনেকে কৃষকই  ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- বিন্দার ২ বিঘা, হোসেন ব্যাপারীর ৩ বিঘা, মৈনিন্ড বিশ্বাসের ৩ কাঠা, করিম খাঁর ৩ বিঘা, কামাল খাঁর ৩ বিঘা, মহসিন ব্যাপারীর ৩ বিঘা, মিঠু লাল কাপাসিয়ার ৬ বিঘা, হরিপদ সরকারের ৩ বিঘা, জগদীশ সরকারের ৭ কাঠা, নিলকমল মন্ডলের ৭ বিঘা, শাহজাহান ব্যাপারির ১০ কাঠা, সুরহাবের ৪ বিঘা, সিরাজুল ইসলামের ১ বিঘা, ফিরোজ মোল্লার ১ বিঘা, রশিদ শিকদারের ৩ বিঘা, ইসহাক ফকিরের ১ বিঘা, শেখ মুন্নাফের ২ বিঘা, শেখ মান্নানের ১ বিঘা, উকিন্ডার দেড় বিঘা, মুমিন ফকিরের ২ বিঘা, কুটির ১০ কাঠা, গেনান্দ বৈরাগীর ২ বিঘা, রামপ্রসাদ মন্ডলের দেড় বিঘা জমির বাদাম নষ্ট হয়েছে।

পদ্মার চরে বাদাম চাষ করা বাকি এলাকাগুলো হচ্ছে হাজি ডাঙ্গী, বাদুল্যা মাতুব্বরের ডাঙ্গী, কামার ডাঙ্গী, আব্দুল গফুর মৃধার ডাঙ্গী এবং মাথা ভাঙ্গা। সেখানকার চাষিদেরও একই অবস্থা।

এ ছাড়াও জেলার বোয়ালমারী এলাকার লংকার চর, আলফাডাঙ্গা এলাকার পাচুড়িয়া, চর পাচুড়িয়া, বেড়িরহাট এলাকার বাদামও নষ্ট হয়েছে।

এ বিপদ কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে অর্থ সহায়তার আবেদন করছেন ক্ষতিগ্রস্ত বাদাম চাষিরা। করোনার এই মুহূর্তে সরকার পাশে না দাঁড়ালে তাদের আর যাওয়ার জায়গা নেই বলেও জানান তারা।

চরভদ্রাসন উপজেলার কৃষি অফিসার প্রতাব মন্ডল বলেন, ‘প্রায় চার মাসে অনাবৃষ্টিতে বাদাম পুড়ে গেছে। এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা তাদের বোঝাচ্ছি যেন আপাতত নিজখরচে সেচের ব্যবস্থা করে। তাদের জন্য পাম্প বসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চাষিদের ক্ষতিপূরণ প্রদানে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছেও আবেদন জানাবো।’

ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. হযরত আলী বলেন, ‘ফরিদপুর জেলায় এ বছর ৫ হাজার ৯৫২ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হচ্ছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টির দেখা নেই। তাই ফলনের অবস্থা খারাপ। কেউ কেউ সেচ দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে। বাদাম এমন এক ফসল যেখানে সেচের বিকল্প নেই।’

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ