
মো.ইকবাল হোসেন
অভিযান অব্যাহত থাকবে বললেন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান
চট্টগ্রামে আরও ১০১টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর
চট্টগ্রামে পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ ইটভাটা বন্ধে দ্বিতীয় দফার অভিযানের শুরুতেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সাতকানিয়ার তিনটি ইটভাটা। এনিয়ে মোট ১৮১ অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৮০টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী। ধারাবাহিক চলা অভিযানে আরও ১০১টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিপ্তর।
গত মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সাতকানিয়া উপজেলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া ইটভাটাগুলো হল, থ্রি স্টার ইটভাটা প্রকাশ (সাবেক চেয়ারম্যান সরোয়ার জামালের ইটভাটা), ফাইভ বিএম ইটভাটা ও ফোর বিএম ইটভাটা।
অভিযানে নেতৃত্বে দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সাতকানিয়ার ঢেমশা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে তিনটি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপ -পরিচালক জমির উদ্দীন বলেন, ‘চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় অবৈধ ইটভাটা আছে ১৮১ টি। গত ২১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম দফায় ৭৭টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ২৫টি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাকি ৫২টির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এখন দ্বিতীয় দফার প্রথম দিনে গত মঙ্গলবার সাতকানিয়ায় তিনটি ইটভাটা গুড়িয়ে দেওয়া হয়। বাকি ১০১টি অবৈধ ইটভাটায় ধারাবাহিক অভিযান চালানো হবে।
এরআগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ রাখতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শরাণাপন্ন হলেও সেখানে পাত্তা পায়নি ২৩ ইটভাটার ১৮ মালিক। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এরপরই জরুরি বৈঠকে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয় ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করার।
এর আগে এসব অবৈধ ইটভাটা ভেঙে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালককে (চট্টগ্রাম) নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আপিলের শুনানিতে ইটভাটার মালিকদের আবেদনের বিপক্ষে আদেশ আসায় অবৈধ ইটভাটা ভাঙতে আর কোনও বাধা রইলো না। তবে এ আপিলের বিষয়ে আগামী ২৯ আগস্ট আপিল শুনানির জন্য দিন ঠিক করেছেন আদালত। যথাসময়ে আদালতকে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপ পরিচালক জমির উদ্দীন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আদালতের নির্দেশ অনুসারে ইটভাটা বন্ধের কর্যক্রম শুরু করলেও লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলাসহ কিছু কিছু জায়গায় ইটভাটা বন্ধ না করে শুধু জরিমানা করে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পদক্ষেপ না নেওয়ার প্রেক্ষিতে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান ও এসএম আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আবেদনে বলা হয়, জরিমানা করার পরেও ওই ইটভাটাগুলো আবারও চলছে এবং পরিবেশ দূষণ করছে। ওইদিন আদালতে শুনানি শেষে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালককে জেলার যে ৭১টি ইটভাটাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে, তাসহ লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত সব অবৈধ ইটভাটা আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বন্ধ করে আদালতে হলফনামা দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছিলেন।