আজ : বৃহস্পতিবার ║ ৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বৃহস্পতিবার ║ ৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

হালদা নদীকে মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা

দেশচিন্তা ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া এই নদীকে নিয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব ছাইদা আক্তার পরাগ স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রুইজাতীয় মাছের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে রুইজাতীয় মাছের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতকরণ এবং মহাবিপন্ন গাঙ্গেয় ডলফিনের আবাসস্থল সংরক্ষণের লক্ষ্যে নদীটিকে মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খাগড়াছড়ির রামগড় ও মানিকছড়ি উপজেলা এবং চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান, হাটহাজারি উপজেলা ও পাঁচলাইশ থানার মধ্যে প্রবাহিত হালদা নদী ও নদীর তীরবর্তী ৯৩,৬১২টি দাগের মোট ২৩,৪২২ দশমিক ২৮০৫৯ একর এলাকা ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষিত হলো। রামগড়ের হাসুকপাড়া পাহাড় থেকে কর্ণফুলী নদীর সংযোগস্থল মোহরা পর্যন্ত প্রায় ৯৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হালদা নদী ও এর তীরবর্তী এলাকা এ ঘোষণার অন্তর্ভুক্ত।

হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করে সরকারের গেজেট প্রকাশের দিন অর্থাৎ বুধবার থেকে হালদা নদীতে ১৬টি শর্ত কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। এগুলো হল-

১. এ নদী থেকে কোনো প্রকার মাছ ও জলজ প্রাণি ধরা বা শিকার করা যাবে না। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে মাছের নিষিক্ত ডিম আহরণ করা যাবে।
২. প্রাণি ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী কোনো প্রকার কার্যকলাপ করা যাবে না।
৩. ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।
৪. মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণির জন্য ক্ষতিকারক কোনো প্রকার কাজ করা যাবে না।
৫. নদীর চারপাশের বসতবাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পয়ঃপ্রণালী সৃষ্ট বর্জ্য ও তরল বর্জ্য নির্গমন করা যাবে না।
৬. কোনো অবস্থাতেই নদীর বাঁক কেটে সোজা করা যাবে না।
৭. হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত ১৭টি খালে প্রজনন মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি-জুলাই) মৎস্য আহরণ করা যাবে না।
৮. হালদা নদী এবং এর সংযোগ খালের উপর নতুন করে কোনো রাবার ড্যাম এবং কংক্রিট ড্যাম নির্মাণ করা যাবে না।
৯. ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটি’-এর অনুমতি ছাড়া হালদা নদীতে নতুন পানি শোধানাগার, সেচ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা যাবে না।
১০. পানি ও মৎস্যসহ জলজ প্রাণির গবেষণার ক্ষেত্রে ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটি’-এর অনুমতি ছাড়া কোনো দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হালদা নদী ব্যবহার করে কোনো গবেষণা কাজ করতে পারবে না।
১১. মাছের প্রাক-প্রজনন পরিভ্রমণ সচল রাখার স্বার্থে হালদা নদী এবং সংযোগ খালের পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১২. সারা বছর হালদা নদীর কর্ণফুলী মোহনা থেকে নাজিরহাট ব্রিজ (অভয়াশ্রম এলাকা) পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত ভারী নৌযান বালুবাহী ও পণ্যবাহী নৌকা এবং ড্রেজার চলাচল করতে পারবে না।
১৩. হালদা এবং তার শাখা নদীর বালুমহাল ইজারা বন্ধ করা এবং ড্রেজার দিয়ে ক্ষতিকর পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করা যাবে না।
১৪. নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কোনো প্রকার তামাক চাষ করা যাবে না।
১৫. নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কৃষি জমিতে ক্ষতিকর কোনো কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
১৬. নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকায় কোনো প্রকার ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ