দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, শিক্ষা পদ্ধতি মানুষের জ্ঞানের বিকাশ ঘটায়। মানুষের চেতনার মানকে উন্নত করে, সৃষ্টিশীল চিন্তাধারাকে উজ্জিবিত করে। মানুষকে নতুন কিছু তৈরী করতে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে অর্থনীতি, শিল্প-সাহিত্য মানবিক প্রবৃদ্ধিসহ সব বিভাগে যদি সৃষ্টির সংখ্যা না বাড়ে তাহলে দেশের উন্নতি হবে না। তাই দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন আলোকিত মানুষ।
তিনি আজ ২৭ অক্টোবর শনিবার সকালে অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক উপ পরিষদের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে সচিব প্রফেসর শওকত আলম ও দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি. সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সোসাইটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আলমগীর পারভেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান লিলি বড়–য়া। এ সময় আলহাজ্ব মো. ইদ্রিছ, আলাউদ্দিন আলম, নুর ইসলাম মিন্টু এবং স্কুল ব্যবস্থাপনা সদস্য মো. শাহ আলম, সৈয়দ শাহরিয়ার পারভেজ, শিপ্তী মহাজন সহ স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন । প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন ইনষ্টিটিউশন পদ্ধতির উৎসগুলোর মধ্যে মুখস্থ বিদ্যা অন্যতম। শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যার আশ্রয়ে শিক্ষিত হয়ে উঠলে সেই পরনির্ভরশীল হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে মস্তিস্কের সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনী ক্ষমতার বিকাশ হয় না। এই পদ্ধতির শিক্ষা হচ্ছে চাকুরী মুখী। যা রোজগারের যন্ত্রে পরিণত হয়। ফলে ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তা ও স্বার্থপরতা নিয়ে তারা বেড়ে উঠে। এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো শুধু নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নয়, সমাজকে কিছু দেয়া। ব্যক্তি যত শিক্ষিত বা বিত্তবান হোক না কেন সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সমাজ মহলে অবদান না থাকলে মৃত্যুর পর ঐ ব্যক্তি মুছে যায়। তিনি আরো বলেন আজকের শিশুরা আগামী দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। তাই তিনি তাদেরকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার আহ্বান জানান। মেয়র বলেন শিক্ষা জীবন শেষে কর্ম জীবনে আদর্শ নাগরিক হতে হবে। আত্মকেন্দ্রীকতা পরিহার করে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য নিজেকে শপে দিতে হবে। পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের পাশা-পাশি পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ প্রেমিক নাগরিক হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রতিষ্ঠানের জন্য নব ভবন নির্মাণের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধনিক একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যা আগামী ২০১৯ এর মধ্যে নির্মাণের কাজ শেষ হবে। এতে করে বিদ্যালয়ের ক্লাস সংকট নিরসন হবে। এ নতুন ভবনে কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরী, মাল্টিপারপাস হল রুম, গালর্স কমন রুম, মিটিং রুম, টিটার্চ রুম, অধ্যক্ষ কক্ষ, ফাস্ট এইড মেডিকেল রুম, স্টোর রুম, এ্যাডমিশন ও একাউন্ট রুম ও অত্যাধুনিক লিফট এবং প্রতিটি ফ্লোরে টয়লেটের ব্যবস্থা থাকবে। মেয়র বলেন বেসরকারি স্কুলের মধ্যে অংকুর সোসাইটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় একটি সনামধন্য বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সনে ১৬৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। এর মধ্যে ১৬৪ জন পাস করেছে। এতে এ+ এর সংখ্যা ৭২ জন, ১৪ শিক্ষার্থী সরকারি বৃত্তি ও ১ জন্য টেলেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় পাশের হার শতভাগ। বোর্ডের সেরা ১০টি স্কুলের নামের তালিকায় অংকুর স্কুল ১০ম স্থান অধিকার করেছে এবং সরকারি বৃত্তি প্রাপ্ত হয়েছে ৪ জন। যা নগরীর অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয়। পরে মেয়র শিক্ষার্থী সহ বৃত্তিপ্রাপ্তদেরকে শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।