
সুয়াইফুল হক, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৩০ বছরে সহস্রাধিক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারিগর এবং অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণদাতা মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টারকে টেকনাফের লামাশীলের ঝিরি পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ২টি পূর্ণ তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি আংশিক তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা এবং বিপুল সরঞ্জাম সহ আটক করেছেন র্যাব-১৫ ।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানা যায়, গোপন সংবাদেরর ভিত্তিতে টেকনাফের হ্নীলার ০৭নং ওয়ার্ড পশ্চিম জুম্মাপাড়া এলাকার লামা শীলের ঝিরি পাহাড়ের পাদদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্যসহ কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী অবস্থান করছে জানতে পেরে ০৯ ফেব্রুয়ারী অনুমান রাত ৭:০০টা নাগাদ র্যাব-১৫ এর একটি দল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছালে র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কতিপয় ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মোঃ মনিরুল হক (৬০) কে আটক করেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জন অস্ত্র কারবারি কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাধারণ জনতার সম্মুখে অভিযানস্থল হতে ০২টি দেশীয় তৈরী এক নলা বন্দুক, ০২টি দেশীয় তৈরী এলজির ব্যারেল, ০২টি হাতল ব্যতীত দেশীয় তৈরী এলজির বডি, লোহার তৈরী দেশীয় এলজির ট্রিগারের বিভিন্ন ছোট অংশ ১৪টি, ০১টি কাঠের হাতল যুক্ত করাত, ০১টি লোহার তৈরী ড্রিল মেশিন, লোহার তৈরী বেঞ্চ বাইছ ০১টি, ০১টি লোহার T আকৃতির বস্তু (যার লোহা পিটানো কাজে ব্যবহৃত হয়), হাতুড়ী ০২টি, ব্লেড সংযুক্ত একটি হেস্কো মেসিন (যা লোহা কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়) ও হেস্কো ব্লেড ০৫টি, প্লাস ০২টি, কাটিং প্লায়ার ০১টি, লোহার তৈরী চিমটি ০১টি, স্ক্রু ড্রাইভার ০১টি, বাটাল ০১টি, রানদা ০১টি, লোহার পাইপ ০৫টি এবং তার কাটা ৬৬টি উদ্ধার করা হয়।
খুঁজ নিয়ে জানা যায় কক্সবাজারের অন্যতম শীর্ষ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাতা ও যোগানদাতা হলেন মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টার।
র্যাব আরো জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল স্বীকার করে সে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছে এবং অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে মনিরুল ইসলাম থেকে মনির মাস্টার উপাধি পেয়েছে।
এছাড়াও সে জানায় যে, তার পিতার নিকট থেকে সে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ নেয় এবং দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ অস্ত্র তৈরি পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, সে এবং অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামীগণের সহযোগিতায় নিজেরা পরস্পর পরস্পরের জ্ঞাতস্বারে এবং সহযোগীতায় কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরীর প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে দেশীয় বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র বর্ণিত গোপন আস্তনায় তৈরী করে কক্সবাজার শহর ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং আরসা সদস্যদের নিকট উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে থাকে।
জিজ্ঞেসাবাদ শেষে উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃত ও অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে টেকনাফ থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন বলেও জানান র্যাব -১৫ কক্সবাজার।