এম, ইব্রাহিম খলিল সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : শেষমুহুর্তেও ঈগলের ডানা ভেঙে দেয়ার অপপ্রয়াস আল্লাহ্ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। সবাই যখন নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত তখনও আমরা প্রার্থীতা বহাল রাখার লড়াইয়ে ব্যস্ত।
সীতাকুণ্ডে সাংবাদিকদের জানান ঈগল পাখি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান বলেন, অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সমাজ গড়া-ই হবে সংসদ সদস্য হিসাবে আমার একমাত্র লক্ষ্য। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টে আপিলের মাধ্যমে পাওয়া আমার প্রার্থীতা বাতিলের জন্য সীতাকুণ্ডের এক প্রার্থী, মোঃ মোজাম্মেল হোসেন লিভ-টু-আপিল করেছিলেন- যদিওবা মহামান্য আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে ঈগল পাখি মার্কায় আমার প্রার্থীতা বহাল রেখেছেন। সবাই যখন নির্বাচনের প্রচারে আনন্দমুখর পরিবেশে আমরা তখনও প্রার্থীতা বহাল রাখার লড়াইয়ে ব্যস্ত। মহান আল্লাহর প্রতি লাখো কোটি শুকরিয়া, তিনি শেষমুহুর্তে হলেও ঈগলের ডানা ভেঙে দেয়ার অপপ্রয়াস নস্যাৎ করে দিয়েছেন।
২৭ ডিসেম্বর , বুধবার সীতাকুণ্ডের স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড এবং আংশিক আকবরশাহ ও পাহাড়তলী) সংসদীয় এলাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল পাখি প্রতিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপকমিটির বিশেষজ্ঞ সদস্য, বিশিষ্ট শিল্পপতি, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান।স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আইনুল কামাল, সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ ইকরাম এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরানের বড় ভাই প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইকবাল।
বক্তব্যে লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান বলেন, আমার লক্ষ্য একটাই। শ্লোগানও একটা- “অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সমাজ গড়া”র প্রত্যয়। আমি সীতাকুণ্ডের গৌরবোজ্জ্বল আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। যেহেতু মাননীয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবার অনুমতি দিয়েছেন। সেজন্য ঈগল পাখি প্রতিক নিয়ে হাজির হয়েছি।
লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান বলেন, আপনারা জানেন, এই নির্বাচনের মাঠে আসতে আমার বেশি দেরি হয়ে গেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেও সামান্য কিছু ভুলভ্রান্তির কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশন আর সুপ্রিম কোর্টে ধর্ণা দিতে দিতেই আমাদের বেশিরভাগ সময় চলে গেছে। তিনি বলেন, নির্বাচনী অফিস দেয়ার ক্ষেত্রেও আমাদেরকে বাধা দেয়া হচ্ছে। তারপরও নির্বাচন কমিশন আর আদালত পাড়ায় ঘুরাঘুরি সহ প্রার্থীতা নিয়ে আমার সব হয়রানি ভোগান্তি আমরা ভুলে গেছি। কেননা, আমিও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী, নৌকাও তাঁর এবং আমাদের প্রতীকও তাঁর। লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান আরো বলেন, নির্বাচনী পোস্টার ব্যানার ছাপানোর এবং তা লাগানোর মতো পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ আমাদের হাতে নিতান্তই কম। যে সময়টুকু আছে তাতে করে গণসংযোগ করা, নির্বাচনী এলাকার মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে যাওয়া কোনোটার সুযোগ তেমন একটা নেই । তবে আনন্দে মন ভরে যায় যখন এলাকাবাসীরা বলে আপনি সময়ের অভাবে আমাদের সাথে সাক্ষাত করতে না পারলেও আমরা ভোট কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে বাদা ছাড়া যেতে পারলে এবং আমাদের ভোট আমাদের আগে অন্য কেউ জালিয়াতি করে দিয়ে না দিলে, আমাদের ভোট আমরা অবশ্যই আপনাকে দিব আপনি একজন ভাল এবং সাদামনের মানুষ বিধায় আমারা ঈগল মার্কায় ভোট দিব।
সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চট্টগ্রাম-৪ সংসদীয় আসনে ঈগল পাখি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রমে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাওয়া রাজনীতিবিদ লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান আরো বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বৃহৎ পরিসরে তৃণমূলের খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষের সেবা করার জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হবার বিকল্প নেই। তাই, সীতাকুণ্ডের মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসায় আমি লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল পাখি মার্কা নিয়ে চট্টগ্রাম-৪(সীতাকুণ্ড এবং আংশিক আকবরশাহ ও পাহাড়তলী) এলাকার সর্বসাধারণ মানুষের সামনে হাজির হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সংবাদ থেকে শুরু করে অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সমাজ গড়ার এ দৃঢ়প্রত্যয়ে এগিয়ে চলার প্রতিটি ধাপে আপনারা আমাদেরকে মিডিয়া কাভারেজ দিয়ে, সত্য তুলে ধরার মাধ্যমে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি আরেকটি বার আপনাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার ঋণে জড়াতে চাই। আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সমাজ গড়ার সুযোগ দিতে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার মানুষের কাছে তুলে ধরবার বিশেষ সুযোগ আমি আপনাদের কাছ থেকে নিতে চাই।
সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরানের পত্নী, বিশিষ্ট নারীউদ্যোক্তা লায়ন নিশাত ইমরান, সারতাজ মোহাম্মদ ইমরান, তাহিয়া নিশাত ইমরান, সারফারাজ মোহাম্মদ ইমরান, আমির নেওয়াজ, শিরিন আরা, জেরিন আরা, ফরিদুল আলম এবং মোহাম্মদ আলী সহ সীতাকুণ্ড উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ সময় লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান সাংবাদিকদের সামনে ১৫ দফা সম্বলিত তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার উপস্থাপন করেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ২৮১, চট্টগ্রাম-৪(সীতাকুণ্ড এবং আংশিক আকবরশাহ ও পাহাড়তলী) এলাকার ঈগল পাখি মার্কায় তৃণমূল জনসাধারণ মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান এর নির্বাচনী ইশতেহারসমূহ হলো-
সমৃদ্ধ জনপদ সীতাকুণ্ডে অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সংঘবদ্ধ ও একনিষ্ঠ নেতাকর্মীর প্রয়োজন। স্রষ্টার অশেষ কৃপায় আমার জন্মস্থান এবং আশৈশবের চারণভূমি বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার ও ঐতিহ্যের আকর সীতাকুণ্ড প্রাচীনকাল থেকে সমৃদ্ধ আত্মনিভরশীল জনপদ। আল্লাহর দয়ায় এখানে ক্ষুধা-মন্দা কিংবা দারিদ্রের হাহাকার নেই।
তাছাড়া, যাবতীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টা অশিক্ষার অন্ধকারে, অপরাধের করাল স্রোতে হারিয়ে যায়। তাই, বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে আমাদের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হবে— “অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে” কাজ করা। আমার প্রথম প্রচেষ্টা হবে সীতাকুণ্ডকে দলীয় কোন্দলের ভয়াবহ বলয় থেকে বের করে আনা। আমি কোন্দল পছন্দ করিনা এবং কোনপ্রকার কোন্দলের সাথে জড়িত নই। সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ পেলে সীতাকুণ্ডের সকল নেতা, কর্মী, সমর্থক প্রত্যেকের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করে সবাইকে সাথে নিয়ে দল-মত-নির্বিশেষে সবাই একসাথে মিলে ‘অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত সমাজ গড়া’র মূলমন্ত্রে সীতাকুণ্ডবাসীর সেবা করবো। ধর্ম-বর্ণ, দল-মত, ধনী-গরীব, শ্রমিক-মালিক ব্যবসায়ী-ভোক্তা, নারী-পুরুষ, ছোট-বড় নির্বিশেষে স্মার্ট সোনার বাংলায় সীতাকুণ্ডের আপামর সকল মানুষের সেবা-ই হবে আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
সীতাকুণ্ডের সাধারণ মানুষ- যাঁদের নিজস্ব গাড়ি নেই, কিংবা স্বল্প দূরত্বের কারণে বাস-ট্রাক-ট্রেনে যাতায়াতও ঝামেলাপূর্ণ এবং নিতান্তই কষ্টকর তাঁদের কথা মাথায় রেখে “সীতাকুণ্ড থেকে চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সমান্তরালে বিশেষ সিএনজি অটোরিকশা লেইন তৈরি করা”।শিক্ষার আলো প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে সীতাকুণ্ডে একটি সরকারি কলেজ (বালক) স্থাপন / সরকারীকরণের কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া।পর্যটনশিল্পের প্রসারে গুলিয়াখালী সৈকত, সহস্রধারা ঝর্ণা, চন্দ্রনাথ পাহাড়, ইকোপার্ক, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতের যথাযথ উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া। বর্তমানে সীতাকুণ্ডের সবচে সমস্যাগুলোর অন্যতম, বেকারত্ব নিরসনে স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের শিক্ষা ও যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকুরির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আমাদের অন্যতম প্রধান কাজ।অরক্ষিত সমুদ্র উপকূলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার পাশাপাশি পাহাড়ি ঢল জনিত জলাবদ্ধতা নিরসনে পর্যাপ্ত স্লুইসগেট নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।জাহাজভাঙা শিল্পের প্রসারে বিশেষ ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করা। সীতাকুণ্ডের সবজি সারাদেশের মধ্যে সুস্বাদু। বিশেষত, শীতকালীন শিম, বরবটি, টমেটো অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। যথাযথভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এ অঞ্চলের কৃষকদের জন্য তা সোনা ফলা বিবেচিত হতে পারে। এজন্য শীতকালীন সবজি বিশেষ করে টমেটো সংরক্ষণাগার নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এতদাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবাকে অত্যাধুনিক ও মডেল হিসেবে উপস্থাপন উপযোগী করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
পাহাড়কাটা, জমিদখল ও যত্রতত্র কারখানার বর্জ্য অপসারণ রোধকল্পে পর্যাপ্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং যথেষ্ট পরিমাণে ইটিপি’র ব্যবস্থাকরণ। সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী ও সলিমপুরে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ। স্টেডিয়াম, শিশুপার্ক ও থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণ। ২৫৬ কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচারাস্তা পাকাকরণ। চট্টগ্রাম-সীতাকুণ্ড বিকল্প সড়ক হাবিব রোডের মানোন্নয়ন।
