
দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা নিরঞ্জনের সুবিধার্থে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে পতেঙ্গা সমূদ্র সৈকতে একটি স্থায়ী ঘাট নির্মাণের ঘোষনা দিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এতে পর্যটক সহ সর্বসাধারনের সমুদ্র চরে যাতায়াত এবং পূজার্থীরা স্বাচ্ছন্দে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে পারবে। প্রায় ১শ ফুট প্রশস্ত এ ঘাটে একসাথে চারের অধিক প্রতিমা নিরঞ্জন সম্ভব হবে। আগামী বছর এ ঘাট দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রতিমা নিরঞ্জন দিতে পারবে। আজ ১৯অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে নগরীর পতেঙ্গা সী বীচে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ও চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সিটি মেয়র আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন বলেছেন দূর্গাপুজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এটা একটা সামাজিক উৎসবও। এই উৎসব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। তৈরি হয় সামাজিক মেলবন্ধন। আগামীতেও এই মেলবন্ধনকে দলমত নির্বিশেষে অক্ষুণœ রাখতে হবে। তিনি বলেন মানবতাই ধর্মের শাশ্বত বাণী। ধর্ম মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথে আহবান করে। অন্যায় ও অসত্য থেকে দুরে রাখে। দেখায় আলোর পথ। তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি সকলকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙ্গালীর চিরকালীন ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে দেশের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায়। এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। জাতীয় জীবনে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মানও অব্যাহতভাবে বাড়ছে। কমেছে দারিদ্র্যের হার । উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রাকে দলমত নির্বিশেষে অব্যাহত রাখতে হবে। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে আজ শুক্রবার শেষ হয়েছে ৫দিন ব্যাপি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজা। এই উৎসবকে ঘিরে আজ জনসমুদ্রে পরিণত হয় নগরীর সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গায়। দুপুর থেকে প্রতিমাবাহি ট্রাক, পিক-আপ ও ভ্যানগাড়ীগুলো আসতে থাকে সমুদ্র সৈকতে। দুগতিনাশিনী দেবী “মা”দুর্গাকে বিদায় জানাতে সমবেত হন নানা বয়সী ভক্তরা। দেখতে দেখতে কানায় কানায় ভরে যায় পুরো সমুদ্র সৈকত। শান্তি পূর্ণ পরিবেশে পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বির্সজন দেয়া শুরু হয় ঘড়ির কাটায় ১২টায়। প্রতিমা বিসর্জনকে সামনে রেখে সৈকত ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়া প্রতিমা বিসর্জন শেষ হয়েছে। এ বছর চট্টগ্রাম নগরীতে ২৫৫ টি পূজা মন্ডপ ছিল। তার অধিকাংশই প্রতিমা বিসর্জন দিতে এসেছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এড.চন্দন তালুকদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ চৌধুরী, জয়নাল আবদীন, শৈবাল দাশ সুমন, বক্তব্য রাখেন। এ সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দাশ অসিত। প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন পরিষদের অঞ্জন দত্ত ও এড.তপন কুমার দাশ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল দত্ত,চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অরবিন্দ পাল অরুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক লায়ন আশিষ ভট্টচার্য, অধ্যাপক অর্পন কান্তি ব্যানার্জী, কেন্দ্রীয় পূজা পরিষদের সদস্য,সাবেক সাধারন সম্পাদক সুমন দেবনাথ, সুজিত দাশ, রত্নকার দাশ টুনু, রানা বিশ্বাস। সীতন শীল, শীমুল কুমার শীল, হিল্লোল সেন উজ্জল, নটু চৌধুরী, নিখিল ঘোষ, পুলক খাস্তগীর, প্রদীপ শীল,বিপ্লব সেন,অরুন রশ্নি দত্ত এছাড়াও আলোচনা করেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ ও থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সিটি মেয়রের সহকারী একান্ত সচিব মো.রায়হান ইউসুফ ও কর্পোরেশনের উপসচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।