
দেশচিন্তা ডেস্ক:
ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয়ভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবমাননার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকালে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে তাদের এই কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের।
এর আগে ঘেরাও কর্মসূচির প্রস্তুতি হিসেবে সকাল ১০টার দিকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর একটি বিশাল মিছিল নিয়ে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাওয়ের উদ্দেশে গুলশানের দিকে রওনা হয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ আটকে দেয় এবং এখানেই তাদের কর্মসূচির ইতি ঘটে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, সংসদে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন করা, বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্সের দূতাবাস সরিয়ে দেওয়াসহ কয়েক দফা দাবি উপস্থাপন করেন। এসব দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন তারা।
আজকের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। মুহাম্মদ (সা.)-কে অপমান করা হচ্ছে। যা ইসলাম ধর্মের প্রতি অবমাননা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুল ম্যাক্রোকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।’ পাশাশাশি জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনারও দাবি জানান সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসের উপকণ্ঠে দেশটির এক স্কুল শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত কার্টুন শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের কারণে ক্ষুব্ধ ওই কিশোর স্কুল শিক্ষককে হত্যা করেন। পরে ফ্রান্সের সরকার ওই স্কুল শিক্ষককে দেশটির সর্বোচ্চ মরণোত্তর পদকে ভূষিত এবং বিভিন্ন ভবনের গায়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত সেই কার্টুন প্রদর্শন শুরু করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই কার্টুনের প্রদর্শনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্টর এই অবস্থানের প্রতিবাদে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলসহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের হিড়িক পড়ে গেছে। অনেক খ্যাতনামা চেইন শপসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফরাসি পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। করোনাকালে এই বর্জনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আঁচ করতে পেরে আরব দেশগুলোর প্রতি পণ্য বর্জন বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে ফ্রান্স।