আজ : বৃহস্পতিবার ║ ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বৃহস্পতিবার ║ ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ║ ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে যুক্তরাজ্যে

দেশচিন্তা ডেস্ক:

কাজের অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে দক্ষ জনবল আনার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য। আগামী জানুয়ারি থেকে ‘স্কিল ওয়ার্কার রুটে’ ন্যূনতম ‘লেভেল থ্রি’ যোগ্যতার পেশার মানুষেরা এ সুযোগ পাবেন।

‘শর্টেজ অকুপেশন লিস্টে’ ৭০টি নতুন পেশা প্রস্তাব করেছে দেশটির কর্মসংস্থান বিভাগ। এর বাইরেও কয়েকশ নতুন পেশা যুক্ত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা ও ব্রেক্সিটপরবর্তী যুক্তরাজ্যকে অর্থনৈতিকভাবে চাঙ্গা করতে এ উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটির সরকার। নতুন আইনের আওতায়, ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে স্থায়ী হতে চাইলে আগের মতো কঠোর আইনের মারপ্যাঁচে পড়তে হবে না।

বিশ্লেষকদের সথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান যুক্তরাজ্যে প্রবাসীদের কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত স্নাতক কিংবা স্নাতক সমমানের ডিপ্লোমা কোর্সের প্রয়োজন হতো। কিন্তু জানুয়ারি থেকে চালু হওয়া নিয়মে এইচএসসি সমমান কিংবা সাধারণ ডিপ্লোমা অর্থাৎ যোগ্যতা লেভেল থ্রি হলেই চলবে। তা ছাড়া কাজের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা পয়েন্টের মাধ্যমে নির্ণয় করা হবে। এতে বাংলাদেশি কমিউনিটি ব্যাপকভাবে উপকৃত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে সব থেকে বেশি জনবল আসে রেস্টুরেন্ট সেক্টরে। কিন্তু নতুন নিয়মে এ সেক্টরের শেফ ক্যাটাগরিতে কোনো ধরনের লেভেল কমানো হয়নি বলে উল্লেখ করা আছে।

এ বিষয়ে ওয়ার্ক পারমিট আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী বলেন, নতুন পদ তৈরি হওয়ায় কিছুটা হলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে। যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা থেকে পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে। তবে সুখবর হচ্ছে নতুন এ নিয়মে সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, সমাজকর্ম, আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত, হাসপাতাল সেক্টরের মানুষেরা যুক্ত হচ্ছে। এ ছাড়া বুচার সেক্টরে লোক নেওয়া যাবে, রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার, ক্যাটারিং ম্যানেজার, সেলস ম্যানেজার সেক্টরগুলোতেও কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে রেস্টুরেন্টের শেফ পেশার সঙ্গে যারা আছেন, তাদের বেতন আগামী জানুয়ারি থেকে বছরে ২৯ হাজার ৫০০ পাউন্ড থেকে কমিয়ে ২৫ হাজার পাউন্ড করা হয়েছে। তাই হয়তো এখানকার কর্মসংস্থান বিভাগ সেফের যোগ্যতা লেভেল কমায়নি। তারা হয়তো এটিকেই একটি পরিবর্তন হিসেবে দেখছে। নতুন সুযোগে স্কিল লেভেল নামিয়ে আনা হয়েছে। আগে যেখানে লেভেল সিক্স সমপরিমাণ শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করা যায়নি, এখন লেভেল থ্রি থেকেই সেটি করা যাবে। লেভেল থ্রি আসার কারণে আমাদের কমিউনিটি লেভেলে অনেক শপ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রচুর পরিমাণে চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হবে।অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে ও মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজারি কমিটি ম্যাক শর্টেজ অকুপেশন লিস্ট ৭০টি নতুন কাজের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে বেতন ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৫০০ পাউন্ড।

যুক্তরাজ্যের মাইগ্রেশন বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে- প্রতিবছর একটি সার্ভে করে কোনো কোনো বিশেষায়িত পদে লোক আনা হয়। দেশের কর্মসংস্থানের পদ খালি থাকলে কিংবা লোকের প্রয়োজন হলেই এমন সুযোগ তৈরি হয়। আর এ সুযোগের মধ্যে সব থেকে বেশি গুরুত্ব পায়, নার্স বা বিজ্ঞানী বা সোশিয়াল কেয়ারে কর্মরতরা।

তবে নতুন শর্টেজ অকুপেশন লিস্টে যুক্ত হচ্ছে- বুচার, কনফেকশনারি কেক ডেকোরেটার্স, ব্রিক লেয়ার যারা করেন তারা। এমনই নতুন নতুন বেশ কয়েকটি পেশা যুক্ত হচ্ছে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে।নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি ও ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা বলেন, কেউ ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে এ দেশে স্থায়ী হতে চাইলে আগে তাদের বেশ কিছু ঝামেলা পোহাতে হতো। তবে নতুন আইনের ক্ষেত্রে সেই সমস্যাগুলো অনেক শিথিল করা হচ্ছে। যেমন আগে কারও প্রথম যে বেতনে ওয়ার্ক পারমিটে আসতেন, পরে সেটি ভিসা এক্সটেনশনের সময় বাড়াতে হতো, এই নতুন নিয়মে যে বেতনে ওয়ার্ক পারমিটে আসবেন, ৫ বছর পর সেই একই বেতন রেখেও তিনি স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে স্কিল ওয়ার্কার হিসেবে এলে সেখানে আবার আগের নিয়মেই মানে যে সময় স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করবেন, তখন ৩০ হাজার পাউন্ড বেতন দেখাতে হবে। না হলে আবেদন প্রত্যাখাত হবে।

তবে এতসব নিয়মের মধ্যেও আইএলটিএস ৪.৫ এটি অর্জন করতেই হবে। তবে ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর আগ্রহ অনেক কম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সম্প্রতি ব্রেক্সিট ও করোনাপরবর্তী সরকারি নানান নিয়মে দেশটির সরকার কোম্পানিগুলোকে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিচ্ছে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য রেজিস্টার করার জন্য। কিন্তু সরকারিভাবে উৎসাহ দেওয়া হলেও মাত্র ৩১ হাজার কোম্পানি ওয়ার্ক পারমিটের জন্য রেজিস্টার করছে, যা ব্রিটেনের মোট কোম্পানির মাত্র ৩ শতাংশ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ