আজ : বুধবার ║ ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বুধবার ║ ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ৭ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

চট্টগ্রামে এমপি মোস্তাফিজকে বহিষ্কারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম

দেশচিন্তা ডেস্ক: বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাাফিজুর রহমান চৌধুরীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা। অন্যথায় সারাদেশের জেলা-উপজেলা থেকে একযোগে ঢাকামুখী লংমার্চসহ সড়ক অবরোধ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা কমিটি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তারা এ দাবি জানান। সমাবেশ শেষে সংসদ সদস্য মোস্তাাফিজুর রহমান চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর ও মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত বলেন, প্রেসক্লাব চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার নির্দেশদাতা বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে চুড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, মোস্তাফিজ ও তার পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা বিরোধী ছিল। না হলে একজন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হয়ে তিনি বাংলাদেশের বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি এমন মন্তব্য করতে পারে না। স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একজন সংসদ সদস্য স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে পার পেয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌঁছাবে না। তাই সরকারের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

সমাবেশে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ বলেন, গত ২৪ আগস্ট আমরা মুক্তিযোদ্ধারা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিলাম। এমন সময় বাঁশখালীর কুলাঙ্গার সংসদ সদস্য মোস্তাফিজের পেটোয়া বাহিনী বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। বাঁশখালীর কুলাঙ্গার সংসদ সদস্যের এই কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। দেশের প্রতিটি জেলায় মুক্তিযোদ্ধারা আজ রাজপথে নেমে এসেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত মোস্তাফিজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হবে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা রাজপথ ছাড়বো না। প্রয়োজনে আমরা সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে বাংলার রাজপথে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।

মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য হয়েও মোস্তাফিজ বারবার বলেছেন বাঁশখালীতে কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। বাঁশখালীতে যদি মুক্তিযুদ্ধ না হয় তাহলে মৌলভী সৈয়দ, সুলতানুল কবির চৌধুরী ও আবু ইউসুফ চৌধুরীরা কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সেটা আমি সংসদ সদস্য মোস্তাফিজের কাছ থেকে জানতে চাই। আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এবং দক্ষিণ জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ করছি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী এমন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগের রাখা ঠিক না। অনতিবিলম্বে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হোক।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি সাহেদ মুরাদ সাকুর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সদস্য মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডার ফোরাম চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের স্বাক্ষী কাজী নুরুল আবছার, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মো. শহীদুল হক চৌধুরী ছৈয়দ, জেলা সংসদের সহকারী কমান্ডার আবদুল রাজ্জাক, মহানগর সংসদের সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস।

বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, সাতকানিয়া কমান্ডার মো. আবু তাহের, আমিনুল ইসলাম ভেদু, আবু মো. সরওয়ার হোসাইন চৌধুরী, নূর উদ্দিন, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম’র জেলার সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শওকত বাঙালি, দোকান মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাহাবউদ্দিন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, বেসরকারী কারা পরিদর্শক আজিজুর রহমান আজিজ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ