দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, দেওবন্দের আটটি নীতিমালা অক্ষুন্ন রেখেই সরকার কওমি মদ্রাসার সনদকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের জাতির মূল শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এই সরকারই কওমি মাদ্রাসার দাওরায় হাদিসের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান প্রদান করার উদ্যোগ নিয়েছে এবং কার্যকর করেছে, যা অতীতের কোনো সরকারই পারেনি। শুধু তাই নয়; কওমি মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদের সব সুবিধা-অসুবিধা এবং আগামী দিনে করণীয় নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা ভাবছে এই সরকার, যাতে তারাও জাতির মূল শক্তি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর করতে পারে।
তিনি ৭ অক্টোবর রবিবার সকাল ১১টায় বান্দরবার পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্প্রীতি মঞ্চে সরকার কর্তৃক কওমি শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর তাকমিল (দাওরাহ) সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান করায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা কওমি ওলামা ঐক্য পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত বিশাল শোকরিয়া সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাংসদ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামিক স্কলার প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, উপমহাদেশে ইসলামের প্রচার প্রসারে কওমি মাদ্রাসা সমূহের ভূমিকা অপরিসীম। ভারতের উত্তর প্রদেশে ঊনিশ শতকের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুকরণে বাংলাদেশে কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পূর্ব পুরুষরা ছিলেন দেওবন্দ তথা কওমি ভাবাদর্শে বিশ্বাসী। রাজধানীর বুকে কাকরাইলে তাবলীগ মসজিদের উন্নয়ন একং বিশ্ব ইজতেমার জন্য টঙ্গির বিশাল মাঠ বরাদ্দ বঙ্গবন্ধুরই অবদান। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি সনদকে সরকারী স্বীকৃতি প্রদানের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত দুই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আলিয়া ধারার মাদ্রাসা সমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি চাকরীতে প্রবেশাধিকারসহ সকল সুযোগ সুবিধা থাকলেও কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীগণ সকল সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল এতদিন। বর্তমান সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘদিন সরকারি চাকরীসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত দেশের কওমী শিক্ষার্থীগণ যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী সকল সরকারি চাকরীতে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হল। তিনি বলেন, সরকারের এই স্বীকৃতির ফলে কোনভাবেই কওমি মাদ্রাসা সমূহ তার স্বকীয়া হারাবেনা। দেওবন্দের আটটি নীতিমালা অক্ষুন্ন রেখেই সরকার কওমি মাদ্রাসার সনদকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন পটিয়া আল জামিয়া ইসলামিয়ার মহাপরিচালক ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সেক্রেটারি জেনারেল আল্লামা মুফতী আব্দুল হালীম বুখারী।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা কওমি ওলামা ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মাওলানা হোছাইন মুহাম্মদ ইউনুছের সভাপতিত্বে সমাবেশে সম্মানিত অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, বান্দরবার পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, বান্দরবার পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, মুফতি মাওলানা এহছান, সাংবাদিক অধ্যাপক সাদত উল্লাহ, মাওলানা মুবিনুল হক, মাওলানা মো: শোয়াইব, মাওলানা হাফেজ মো: হারুন প্রমুখ।