
দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
জীববৈচিত্র্য জরিপ ও সংরক্ষণ পাইলট প্রকল্প-২০১৮ শুরু করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। আজ ৪ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৯ টায় নগরীর শুলকবহর ওয়ার্ডে এই পাইলট প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রাথমিক পর্যায়ে পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুলকবহর ওয়ার্ডকে সমীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেছে। যা পর্যায়ক্রমে নগরীর সব ওয়ার্ডে করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে চসিক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। জীববৈচিত্র্য জরিপ ও সংরক্ষণ পাইলট প্রকল্পটি পরিচালনা করবে বায়োডাইভার্সিটি রিসার্চ গ্রুপ অব বাংলাদেশ (বিএফজিবি)। সংবাদ সম্মেলনে এ প্রকল্পের সার্বিক বিষয় নিয়ে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএফজিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.বদরুল আমিন ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে.কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিএফজিবি’র চেয়ারম্যানের বক্তব্যে জানা যায় এ প্রকল্পে সহযোগী হিসেবে কাজ করবে অধ্যাপক ড.আমিন উদ্দিন মৃধা, অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল পাশা, অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ কামাল হোসাইন,অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল মিয়া, অধ্যাপক নোমান আহমেদ সিদ্দিকী, অধ্যাপক ড.এম মারুফ হোসেন, অধ্যাপক ড. এম জুনায়েত সিদ্দিকী, ড. শেখ আবদুল মান্নান, ড.মাহমুদা বেগম, সন্তোষ মজুমদার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় অভিজ্ঞ কিছু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী। সংবাদ সম্মেলনে শুকলবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় একটি শহরে নাগরিকদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকা ও বেড়ে উঠার জন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশকে টেকসইরাখা অত্যন্ত জরুরী। আর এজন্য শহরবাসীকে সচেতন রাখা প্রয়োজন। তাই নগরীর জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব অনুধাবন করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ সমীক্ষা পরিচালনার জন্য বিআরজিবিকে দায়িত্ব দিয়েছে। এ জরিপ ও সংরক্ষণ পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীতে কি পরিমান গাছ-পালা,পশু-পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর সংখ্যা, এলাকার জনসংখ্যা অনুপাতে গাছপালা,পশুপাখি সহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর ভারসাম্য কতটুকু তা জানা যাবে। এতে করে কোনটির অভাবে কোন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তা নির্ণয় করে তা সহজেই সমাধান করা যাবে। নগরীর এই সমীক্ষা কার্যক্রম আগামী ডিসেম্বরে সম্পন্ন হবে বলে অধ্যাপক ড.বদরুল আমিন ভুঁইয়া সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন এ পাইলট প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে পুরো শহরের জীববৈচিত্র্য জরীপের পরিকল্পনা নেয়া হবে। তিনি বলেন এ ধরনের জরিপ কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাহাড়-বৃক্ষ-পুকুর-প্রাণীর প্রয়োজনীয়তা সচেতনতার কারনে মানুষ উপলব্ধি করতে পারছে না। জরিপ কার্যক্রমের প্রাপ্ত তথ্যের পরিসংখ্যান থেকে নগরের সমস্যা চিহ্নিত করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জীববৈচিত্র্য জরিপ সংরক্ষণ নিয়ে যে পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে, এ ধরনের কোন উদ্যোগ দেশের কোন সিটি কর্পোরেশন নেয়নি বলে মেয়র উল্লেখ করেন। মেয়র এ জরিপ কার্যক্রম দেশের অপরাপর সিটি কর্পোরেশনের অনন্য দৃষ্ঠান্ত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন সিটি কর্পোরেশন আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারনে আপতত পাইলট প্রকল্পটি শুলকবহর ওয়ার্ডে শুরু হবে তা পরবর্তীতে সব ওয়ার্ডে চলবে।
অনুষ্ঠানে শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোরশেদ তার বক্তব্যে এই গবেষনা কর্মের জন্য তার ওয়ার্ডকে বেছে নেয়ার জন্য সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন এই ওয়ার্ডটি নগরীর জনবহুল এলাকা। এই ওয়ার্ডে পাহাড়,জলাশয়,পুকুর,গাছপালা,নালা নর্দমা বিদ্যমান। তিনি এই জরীপ কার্যক্রমকে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।