
দেশচিন্তা ডেস্ক: উদীচী, ছায়ানট, দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ-ধ্বংসযজ্ঞ এবং ময়মনসিংহে যুবককে পুড়িয়ে মারার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। এতে সিপিবির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহআলম বলেছেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ভেতরের কারও কারও ইন্ধনে দেশবিরোধী উগ্রবাদী গোষ্ঠী এ ধ্বংসাত্মক খেলায় মেতেছে।
আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর সিনেমা প্যালেস চত্বরে জেলা সিপিবির উদ্যোগে এ সমাবেশ ও মিছিল হয়েছে।
সমাবেশে চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মো. মছিউদ্দৌলাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহআলম, জেলা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রদীপ চক্রবর্তী ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি প্রমোদ বড়ুয়া।
সমাবেশে মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, দিনে-দুপুরে ঢাকার রাজপথে প্রকাশ্যে গুলি করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ উসামন বিন হাদীকে হত্যার ঘটনায় দেশবাসী ব্যথিত। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যে ধরনের ধ্বসাত্মক কার্যকলাপ চালানো হয়েছে, সেটা দেশবাসীকে স্তম্ভিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতিশীল চেতনার সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী ও ছায়ানট কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের মতো দুটি গণমাধ্যমের কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ধ্বংসযজ্ঞ কার স্বার্থে, কেন ঘটানো হয়েছে, হাদী হত্যার সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক কী, এসব প্রশ্ন সারাদেশের মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহে কথিত ধর্ম অবমাননার অজুহাত তুলে দিপু চন্দ্র দাস নামে এক যুবককে মব সৃষ্টি করে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে প্রকাশ্যে বিকৃত উল্লাস করতে করতে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। একটি সভ্য সমাজে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড কল্পনাও করা যায় না। এসব বিভৎস বর্বরতা প্রতিরোধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিন্দুমাত্র ভূমিকা রাখেনি। সুতরাং সরকার এই ধ্বংসযজ্ঞের দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতায় ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া এই দেশ আজ উগ্রবাদের চারণভূমি হতে চলেছে। সরকারের নীরব প্রশ্রয়ে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করে ধারাবাহিকভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। মবতন্ত্রের মাধ্যমে তারা আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা সবকিছু মুছে দিতে চায়।
শাহআলম আরও বলেন, সরকারের প্রতি আহ্বান- মবতন্ত্র, সহিংস উগ্রবাদের লাগাম টেনে ধরুন। সরকারের ভেতর কারও কারও প্রশ্রয়ে-ইন্ধনে উগ্রাবাদীরা নির্বাচন বানচালের জন্য ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে মেতে উঠেছে বলে দেশের মানুষ মনে করে। আমরা সরকারকে বলব- ঘোষিত সময়ে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নির্বাচন বানচালের কোনো চেষ্টা এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।










