
দেশচিন্তা ডেস্ক: আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের ১৮তম কাউন্সিল অফ দি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে এএফএমসি থেকে পাস করা ইন্টার্নদের ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে কলেজের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
কাউন্সিল সভায় আলোচকরা বলেন, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে শিক্ষার মান সবসময় উন্নত, যা বিভিন্ন পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রতিফলিত হচ্ছে। এ সময় আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষার ফলাফলে এ কলেজের পাশের হার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ দেশের একমাত্র আবাসিক চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলেও জানান আলোচকরা।
১৮তম কাউন্সিল অব দি কলেজের সভায় আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের বাজেট, ভর্তি প্রক্রিয়া, পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল অবহিতকরণ, Full Free MBBS Scholarship-এর মাধ্যমে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (CAR)-এর ০৪ (চার) জন বিদেশি ক্যাডেট-এর ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম অবহিতকরণ ও ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ফিলিস্তিনের ২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি অনুমোদন, এ কলেজ থেকে পাস করা ইন্টার্নি চিকিৎসকগণকে সিএমএইচ ঢাকায় চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কলেজের সার্বিক মান উন্নয়নে সেনাবাহিনী প্রধান আজ এএফএমসি একাডেমিক ভবনের সম্প্রসারণ, ছাত্রীনিবাসের সম্প্রসারণ, মসজিদ কমপ্লেক্স, দর্শক গ্যালারী ও মাল্টিপারপাস হল এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
১৯৯৭ সালে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল ইনস্টিটিউটের স্থাপনায় আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৯৯৯ সালের ২০ জুন ৫৬ জন মেডিকেল ক্যাডেট নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এই কলেজে ৬টি শিক্ষাবর্ষে (ইন্টার্নিসহ) মোট ৭৬০ জন ক্যাডেট অধ্যয়নরত। এ পর্যন্ত ২২টি ব্যাচে ১০০জন বিদেশি ডাক্তারসহ মোট ১৯০৮ জন চিকিৎসক হয়েছেন যার মধ্যে ৫৪৭ জন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ দেশে বিদেশে কর্মরত আছেন।
আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে শিক্ষার মান সর্বদাই উন্নত যা বিভিন্ন পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রতিফলিত হচ্ছে। জন্মলগ্ন থেকে এএফএমসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকলেও বর্তমানে সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর অধিভুক্ত।
বিভিন্ন পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষার ফলাফলে এ কলেজের পাসের হার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।
আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ দেশের একমাত্র বাধ্যতামূলক আবাসিক সরকারি চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই হরতাল, ধর্মঘট বা অবরোধের মতো পরিস্থিতি শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না।
এ কলেজ ২০০৫ সাল থেকে ‘JAFMC’ শিরোনামে একটি মানসম্মত মেডিকেল জার্নাল ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে যা International Standard Serial Number (ISSN), Directory for Online Access of Journal (DOAJ), International Association of Scientific Publications (INASP) J Health Inter-network Access to Research Initiative (HINARI) কর্তৃক নিবন্ধিত এবং Bangladesh Medical and Dental Council (BM&DC) কর্তৃক অনুমোদিত, যা দেশ বিদেশের চিকিৎসকগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
সভা শেষে সেনাপ্রধান এএফএমসি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে একাডেমিক ভবনের সম্প্রসারণ, ছাত্রীনিবাসের সম্প্রসারণ, মসজিদ কমপ্লেক্স, দর্শক গ্যালারী, মাল্টিমারপাস হল ও এএফএমসি প্রধান ফটকসহ ৬টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
সভায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান, বিএসপি, এনডিসি, এইচডিএমসি, পিএসসি, পিএইচডি; সামরিক চিকিৎসা সার্ভিসের (ডিজিএমএস) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী মো. রশীদ-উন-নবী, এমফিল, এমপিএইচ; সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি; আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. মাসুদুল আলম মজুমদার, বিএসপি, এফসিপিএস; বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ (বিইউপি)-এর উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি ছাড়াও প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।










