আজ : বৃহস্পতিবার ║ ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বৃহস্পতিবার ║ ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১লা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সৌদির গ্র্যান্ড মুফতি হলেন শায়খ সালেহ আল-ফাওযান

দেশচিন্তা ডেস্ক: সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় পদ ‘গ্র্যান্ড মুফতি’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিশিষ্ট আলেম শায়খ সালেহ আল-ফাওযানকে।মুসলিম বিশ্বের দুই পবিত্র মসজিদ, মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর খাদেম বাদশাহ সালমান তাকে সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সুপারিশের ভিত্তিতে বুধবার (২২ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত রাজকীয় আদেশ জারি করা হয়।

রাজকীয় আদেশ অনুযায়ী, শেখ ফাওযানকে সিনিয়র আলেম পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইফতা ও গবেষণাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি সম্প্রতি প্রয়াত গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুলআজিজ আল-শেখের স্থলাভিষিক্ত হলেন, যিনি গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের ইসলামী অঙ্গনে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত শায়খ সালেহ আল-ফাওযান। তিনি এর আগে সিনিয়র আলেম পরিষদ ও ইফতা কমিটির সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি মুসলিম বিশ্ব লীগের আওতাধীন ইসলামিক ফিকহ কাউন্সিলের সদস্য এবং হজ মৌসুমে দায়িত্বরত দাঈদের তত্ত্বাবধান কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৩৫ সালে সৌদি আরবের আশ-শিমাসিয়াহ, কাসিম অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন শায়খ আল ফাওযান। শৈশবেই পিতৃহীন হয়ে পড়েন তিনি। তবে পরিবার ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম শায়খ হাম্মুদ বিন সুলায়মান আত-তিলালের তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠেন। তার কাছ থেকেই কোরআন তিলাওয়াত ও প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি হয়।

১৯৫০ সালে তিনি আশ-শিমাসিয়াহর একটি সরকারি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৯৫২ সালে বুরাইদার আল-ফয়সালিয়া স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কিছুদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন।

১৯৫৪ সালে তিনি বুরাইদার ইসলামী ইনস্টিটিউট-এ ভর্তি হন, যা সে সময় নতুন প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল। চার বছর পর সেখান থেকে স্নাতক শেষ করে রিয়াদের শরিয়াহ কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৬১ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

পরবর্তীতে একই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি ফিকহ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্নাতকোত্তর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে অনুমানভিত্তিক অনুসন্ধানের প্রয়োগ’ এবং পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী খাদ্য সংক্রান্ত বিধান’।

তিনি হায়ার ইনস্টিটিউট অব জুডিশিয়ারির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯২ সালে স্থায়ী ইফতা কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন।

শায়খ ফাওযান বহু গ্রন্থের লেখক এবং ইসলামী শিক্ষায় অবদান রাখার জন্য সুপরিচিত। তিনি জনপ্রিয় রেডিও অনুষ্ঠান ‘নূর আলা আল-দার্ব’র নিয়মিত আলোচক হিসেবেও শ্রোতাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

শায়খ সালেহ আল-ফাওযানের নিয়োগের মাধ্যমে সৌদি আরবের ধর্মীয় নেতৃত্বে নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। নেতৃত্ব একাধারে ঐতিহ্য, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার পরিচয় বহন করছে।

সূত্র : সৌদি গেজেট, আরব নিউজ, গালফ নিউজ

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ