দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, শিক্ষার সঙ্গে নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ বিষয়ের ওপর জোর দিতে হবে। বর্তমান সরকার নতুন প্রজন্মের মাঝে নৈতিকতাবোধ ও মনুষ্যত্বের চেতনা বিকাশে ভূমিকা রাখছে। উপমন্ত্রী বলেন, ওলী-মনীষী-আধ্যাত্মিক মনীষীরাই আমাদের পথের দিশারী ও বাতিঘর। তেমনি গাউসুল আযম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক:) ও শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক:) সহ মাইজভান্ডারী মহাত্মা ও আধ্যাত্মিক সাধকদের জীবন দর্শন বর্তমান প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরে তাদেরকে আদর্শিকভাবে উজ্জীবিত, নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও আলোকিত মানুষরূপে গড়ে তুলতে হবে।
ত্বরিকায়ে মাইজভান্ডারীয়ার প্রতিষ্ঠাতা গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (কঃ)’র ১১৩তম উরস উপলক্ষে শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (কঃ) ট্রাস্টের উদ্যোগে ১০দিন ব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৫ম দিনে মাইজভান্ডারী একাডেমি আয়োজিত যুগপূর্তি শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেল একথা বলেন।নগরীর নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ১৮ জানুয়ারি শুক্রবার দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর সমাবেশ ও শিশুদের অংশগ্রহণে নানা প্রতিযোগিতা। সকাল সাড়ে ৯ টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। এতে উদ্বোধক ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। মাইজভান্ডারী একাডেমির সভাপতি চবি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন শিশু-কিশোর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। উপমন্ত্রী নওফেল মাইজভান্ডারী একাডেমি ও শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক:) ট্রাস্টের বুদ্ধিবৃত্তিক, জ্ঞানধর্মী ও সৃষ্টিশীল নানা পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
“প্রতিভার দুয়ার খুলে আকাশ ছুঁবো” প্রতিপাদ্য বিষষ নিয়ে অনুষ্ঠিত যুগপূর্তি অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান মেলা, অগ্নি নির্বাপক ও ট্রাফিক বিষয়ক সচেতনতা, স্কাউটিং, কুটির শিল্প মেলা, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি, মূকাভিনয়, মিনি অলিম্পিয়াড, বৃক্ষ ও পাখি পরিচিতি, পাপেট শো এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ক্বেরাত, হামদ-নাত, রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে তিন সহস্রাধিক শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে।
উদ্বোধক ড. শিরীণ আখতার বলেন, সন্তানদেরকে কেবল শিক্ষিত করলে হবেনা। তাদেরকে সত্যিকার অর্থে মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হওয়ার শিক্ষা-দীক্ষাও দিতে হবে। মাইজভান্ডারী একাডেমির শিশু-কিশোর সমাবেশ আদর্শ সুনাগরিক গড়ায় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে গাউসিয়া হক মনজিলের সাজ্জাদানশীন রাহবারে আলম হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান (মজিআ) এর শুভেচ্ছা বক্তব্য পড়ে শোনান এস.জেড.এইচ.এম ট্রাস্টের সচিব এএনএমএ মোমিন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, শাহজাদা সৈয়দ আহমদ মুনতাজির জিয়া, গবেষক ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, চবি অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ, মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ হোসেন চৌধুরী, মাইজভান্ডারী মরমী গোষ্ঠীর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এ ওয়াই এম জাফর, লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী, সিরাজুল মোস্তফা। এতে অতিথি ও আলোচক ছিলেন, মাইজভান্ডারী একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মীর মোহাম্মদ তরিকুল আলম, শিশু-কিশোর সমাবেশেরপ্রধান সমন্বয়ক এইচ এম রাশেদ খান,কর্নেল মোঃ শওকত ওসমান পিএসসি, চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদ ও সাইমন সাদিক, কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীন, এস.এম ফজলুল হক ফজু,মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এম মাকসুদুর রহমান হাসনু, নুরুল করিম নুরু, আশরাফুজ্জামান আশরাফ, সাংবাদিক আ ব ম খোরশিদ আলম খান, আবুল মনসুর, আশরাফ উদ্দিন সিদ্দিকী, মেজবাহ উদ্দিন, ওমর ফারুক, শামসুল ইসলাম, মো. মোরশেদুল করিম চৌধুরী, আহসান উল্লাহ চৌধুরী বিভন, আরেফিন রিয়াদ, লায়ন ডা: বরুণ কুমার আচার্য্য, মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ নাছির উদ্দীন, মোহাম্মদ ওসমান গণি, আবদুল্লাহ মোঃ ইকবাল প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিল খুদে শিল্পী সুহি। তাজকিয়ার সদস্যবৃন্দ শিশু-কিশোর আয়োজনে সহযোগিতা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিশু-কিশোরগণ আমাদের ভবিষ্যত নির্মাণ করবে। আগামী দিনে তারাই আমাদের বাতিঘর হিসাবে পথ দেখাবে। তাই শিক্ষা জীবন থেকেই তাদেরকে সৎ, যোগ্য, মানবিক, বিনয়ী ও উদারপ্রবণ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। মাইজভান্ডারী আধ্যাত্মিক মহাত্মাদের দয়া মহানুভবতা ও উদারতার শিক্ষা প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে পারলে তারা অবশ্যই আলোকিত মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারবে।