আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

অনুমোদিত পণ্যের ওজন হ্রাস ও নকল পণ্যের বিক্রয় বন্ধে বিএসটিআই চেয়ারম্যানকে সিআরবি’র আবেদন

দেশচিন্তা ডেস্ক: গত ০৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ক্রেতা সুরক্ষা আন্দোলন – ভলান্টারি মুভমেন্ট কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ (সিআরবি)-এর উদ্যোগে “বিএসটিআই অনুমোদিত পণ্যে ওজন হ্রাস ও নকল পণ্যের বিপণন বন্ধ করে ভোক্তা সুরক্ষার জন্য” বিএসটিআই চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন দাখিল করা হয়।

আবেদনপত্র হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন সেলফ এইড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব আ. হ. ম. কামরুজ্জামান চৌধুরী, সিআরবি জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (আপীল ও হাইকোর্ট বিভাগ) সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবুল হাশেম, সিআরবি’র মহাসচিব ডিজাইনার কেজিএম সবুজ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জনাব মো: আব্বাস উদ্দীন ধ্রুব প্রমুখ।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড কয়েক বছর আগে “ফ্যামিলি প্যাক” নামে জার্মিচেক টুথপেস্ট ২০০ গ্রাম ওজনে বাজারজাত শুরু করে। কিন্তু সিআরবি’র বাজার পর্যবেক্ষণ টিম দেখতে পায় যে বর্তমানে জার্মিচেক ফ্যামিলি প্যাক ১৯০ গ্রাম ওজনে বিক্রয় হচ্ছে। একইভাবে ডাবর রেড টুথপেস্ট-ও বিএসটিআই অনুমোদিত ২০০ গ্রাম ওজনে থাকলেও বাজারে ১৯০ গ্রাম ওজনে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও দেখা যায়, অলিম্পিক কোম্পানির “পালস চকোলেট”-এর আদলে একাধিক প্রতিষ্ঠান একই নাম ও মোড়কে নিম্নমানের চকোলেট বাজারজাত করছে। একইভাবে “লেক্সাস” নামের বিস্কুটও বিভিন্ন কোম্পানি একই ধরনের প্যাকেটে বিক্রয় করছে, ফলে সাধারণ ভোক্তাদের পক্ষে আসল ও নকল পণ্য পার্থক্য করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

উল্লিখিত বিষয়গুলো কেবল ভোক্তাদের প্রতারিত করছে না, বরং বিএসটিআই অনুমোদিত মান ও ওজন সংক্রান্ত আইনকেও অমান্য করছে বলে প্রতীয়মান হয়।

সিআরবি জানায়, ভোক্তা অভিযোগের ভিত্তিতে বাজার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এসব অনিয়মের প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বিষয়টি একাধিকবার মৌখিকভাবে বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়কে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে রহস্যজনক কারণে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর বা দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সিআরবি’র বিশ্বাস—ওজন কারচুপি ও নকল পণ্য বাজারজাতকরণে বিএসটিআইয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন। তাই বিভাগীয় তদন্ত ও ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে বিএসটিআই চেয়ারম্যান বরাবর এ আবেদন দাখিল করা হয়।

বর্তমানে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় বিএসটিআই কার্যালয় থাকলেও পণ্যের ওজন হ্রাস, অনুকরণ ও প্রতারণার প্রবণতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে সাধারণ ভোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও নৈতিকভাবে প্রতারিত হচ্ছেন।

সিআরবি’র প্রস্তাবিত সংস্কার সুপারিশসমূহঃ
১. অনুমোদিত পরিমাপের চেয়ে কম ওজনে পণ্য বিক্রয়ের বৈধতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. ভেজাল, অনুকরণীয় ও বিভ্রান্তিকর প্যাকেজিংয়ে বাজারজাত পণ্যের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
৩. সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে পণ্য ওজন, মান ও লেবেলিং সংক্রান্ত বিএসটিআই অনুমোদন পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ প্রদান।
৪. ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা রোধে জেলা পর্যায়ে নিয়মিত বাজার তদারকি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা।
৫. বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ওজন কারচুপি ও নকল পণ্য বাজারজাতকারীদের পৃষ্ঠপোষকতায় জড়িত অসাধু কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করা।

চেয়ারম্যান মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় আবেদনপত্রটি বিএসটিআই সদরদপ্তরের পরিচালক (সিএম) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

সিআরবি কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা—বিএসটিআই ভোক্তা সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং অনুমোদিত পণ্যে ওজন হ্রাস ও নকল পণ্যের বিপণন বন্ধ করে প্রকৃত ভোক্তা অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ