আজ : শুক্রবার ║ ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শুক্রবার ║ ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ║২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ‘ছাতা’ নিয়ে নির্বাচন করবেন ড. কর্ণেল অলি

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ :
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩ দলীয় জোটের ড. কর্ণেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম তাঁর দলীয় এলডিপি’র প্রতীক ‘ছাতা’ নিয়ে নির্বাচন করছেন। কর্ণেল অলি ২০০৬ সালে বিএনপি থেকে বেরিয়ে এলডিপি গঠন করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে তিনি এককভাবে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ছাতা’ প্রতীক নিয়ে আ.লীগের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দিন আহমেদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সে নির্বাচনে বিএনপি’র পক্ষে এড. মিজানুল হক চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নির্বাচনে কর্ণেল অলি ৮২ হাজার ৩৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ.লীগের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দিন আহমেদ পেয়েছিলেন ৬১ হাজার ৬৪৬ ভোট। পাশাপাশি বিএনপি প্রার্থী এড. মিজানুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ৩৩ হাজার ৩৩৫ ভোট পেয়েছিলেন।
এবারের নির্বাচনে ২৩ দলীয় জোটের সাথে যুক্ত হয়ে অংশ গ্রহণ করলেও তিনি তাঁর দলীয় প্রতীক ‘ছাতা’ নিয়ে নির্বাচন করছেন। তাছাড়া তাঁর দলীয় অন্যান্য প্রার্থীরা ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন। মূলত এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে ২৩ দলীয় জোট প্রার্থী এলডিপি নেতা কর্ণেল অলি’র ভোটযুদ্ধ হবে। কিন্তু এ আসনে বসে নাই অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। যারা এ নির্বাচনে নিজ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা হলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শিহাব উদ্দিন মো. আবদুস সামাদ, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের মো. দেলোয়ার হোসেন সাকিল, ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশের জানে আলম নিজামী, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি’র আবদুল নবী, তরিকত ফেডারেশনের মো. আলী ফারুকী, ন্যাপে’র আলী নেওয়াজ খান, জাতীয় পার্টি’র মো. অলি উল্লাহ চৌধুরী মাসুদ, স্বতন্ত্র মো. মনিরুল ইসলাম, মো. শাহাজাহান, সুষশময় চৌধুরী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ততই ভোটের হিসাব-নিকাশের তৎপরতা বেড়ে চলেছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভোটারদের মধ্যে একটি অংশ ধানের শীষে ভোট না দিলেও কর্ণেল অলিকে ব্যক্তি হিসেবে পছন্দ করেন। তাই এ লক্ষ্যকে কাজে লাগিয়ে কর্ণেল অলি তাঁর দলীয় প্রতীক ‘ছাতা’ নিয়ে নির্বাচন করছেন বলে জানা যায়। পাশাপাশি কর্ণেল অলি’র ভোট ব্যাংক হিসেবে উপজেলার কয়েকটি এলাকা চিহ্নিত আছে। যেখানে ভোটের হিসাবে তিনি প্রত্যেকটা নির্বাচনে অন্যান্য প্রার্থী থেকে ভোটে এগিয়ে থাকেন। এলডিপি ও ২৩ দলীয় জোটের সমর্থকেরা জানান, কর্ণেল অলি বিগত ৬ বার সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে চন্দনাইশের প্রতিটি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও সংস্কারের ব্যাপক উন্নয়নের কারণে অত্র এলাকার ভোটাররা তাদের ভোট ‘ছাতা’ প্রতীকে তথা কর্ণেল অলি’কে প্রয়োগ করবেন। তাছাড়া সাধারণ ভোটাররা তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তার কারণে অন্যান্য প্রার্থী থেকে এ আসনে তিনি ভোটে জয়লাভ করবেন বলে- এমনটাই ভাবছেন বিজ্ঞ রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, ২০১৪ সালে আ.লীগের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার পর আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছেন। ফলে, কর্ণেল অলি’র ভোট ব্যাংকে হানা দেয়ার জন্য আট-ঘাট বেঁধে নেমেছেন। মহাজোট প্রার্থী আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী ২শ ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে শঙ্খের ভাঙ্গন প্রতিরোধ, এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন খোদারহাট সেতুটি উম্মুক্ত করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজে একাডেমিক ভবন নির্মাণ, সড়কের সংস্কারসহ টিআর, কাবিখার মাধ্যমে প্রায় সহস্র কোটি টাকার কাজ করেছেন। ফলে, এ উন্নয়ন কর্মকান্ডকে কাজে লাগিয়ে তিনি জনগণের মন জয় করার পাশাপাশি ভোট আদায়ের সুযোগ করে নিয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে, দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই এ আসনে বিজয় লাভ করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। তবে, কর্ণেল অলি বিগত ১০ বছর ধরে উন্নয়ন কর্মকান্ডে তেমন কোন ভুমিকা রাখতে না পারায় সাধারণ ভোটারদের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তা আলোচনায় উঠে আসছে। সব মিলিয়ে জয়ের মালা কে পরবেন? তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ