
দেশচিন্তা ডেস্ক: প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে সোমবার (১৮ আগস্ট), বিকেল ৩.৩০টায় ‘জিরো প্লাস্টিক ২০৪০’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিস এবং কোরিয়ান মিশনারি সংস্থা অ্যাসেজ (এএসইজেড)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারের মূল লক্ষ্য ছিল পরিবেশ সংরক্ষণে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরকে বৈশ্বিক আলোচনায় সম্পৃক্ত করা এবং ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিকমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রয়াসকে জোরদার করা। এই সেমিনারে উদ্বোধক ছিলেন ওয়ার্ল্ড মিশন সোসাইটি সার্চ অব গড (ডব্লিউএমএসসিওজি)-এর চেয়ারম্যান মি. সলোমন কিম। অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম ও ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার জনাব মোহাম্মদ ইফতেখার মনির। স্বাগত বক্তা ছিলেন ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের ডিরেক্টর জনাব সাদাত জামান খান। মি. সলোমন কিম উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, পরিবেশ আমাদের ভবিষ্যত। পরিবেশ রক্ষা মানে শুধু গাছ লাগানো নয়, আমাদের পরিবার, আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ ও আমাদের পৃথিবীকে রক্ষা করা। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য আমাদের জীবনযাত্রার ধরণ ও অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহারের দায় রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব—পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও টেকসই পৃথিবী নিশ্চিত করা। জিরো প্লাস্টিক ২০৪০ একটি বৈশ্বিক আন্দোলন, যেখানে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
অতিথির বক্তব্যে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম বলেন, প্লাস্টিক মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছে যে, তা থেকে মুক্ত হওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু মানবসভ্যতা ও পরিবেশকে রক্ষার জন্য প্লাস্টিকের ব্যবহার অবশ্যই শূন্যে নিয়ে আসতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বিদ্যা অর্জনের জায়গা নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার সূতিকাগার। পরিবেশ রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন ও সক্রিয় করা আমাদের দায়িত্ব।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার জনাব মোহাম্মদ ইফতেখার মনির বলেন, পরিবেশ রক্ষা এখন শুধু কোনো শহর বা দেশের জন্য নয়, পুরো পৃথিবীর জন্য বিশাল ইস্যু। তিনি আরও বলেন, জীবনযাত্রার ধরণ পরিবর্তন না করলে পৃথিবীর পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সংকটময় পৃথিবীতে বসবাস করতে হবে। ‘জিরো প্লাস্টিক ২০৪০’ একটি মহতী উদ্যোগ, যা বৈশ্বিক সচেতনতা ও একসাথে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরে।
স্বাগত বক্তব্যে ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের ডিরেক্টর জনাব সাদাত জামান খান বলেন, এই ধরনের সেমিনার শুধু আলোচনা নয়, বরং বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রেরণা জোগায়। আমরা আশাবাদী, এই উদ্যোগ প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের জলবায়ু ও পরিবেশ সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
সেমিনারে জিরো প্লাস্টিক ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়কে ঘিরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ভিডিও ক্যাম্পেইন এবং প্রেজেন্টেশন পরিচালিত হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠিত হয় একটি ‘সাপোর্টিং সাইনিং সিরমনি’, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা পরিবেশ রক্ষার অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করেন।
সেমিনারের শেষ পর্বে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জনাব মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, জনাব সাদাত জামান খান, মি. সলোমন কিম, আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব জাভেদ আরাফাত এবং অ্যাসেজ-এর প্রতিনিধি টরোসি।
অনুষ্ঠান শেষে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ও অ্যাসেজ-এর মধ্যে ‘জিরো প্লাস্টিক ২০৪০’ লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির প্রক্টর মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী, ডিরেক্টরেট অব স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ারের এডভাইজার ড. আবদুর রহিম, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক (ইটিএল) গাজী শাহাদাত হোসেন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও কো-অর্ডিনেটর, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।