
কক্সবাজার সংবাদদাতা: কক্সবাজারের থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভোরে অতর্কিত সশস্ত্র হামলায় ৬ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আহত হয়েছে আরো অন্তত ১০/১৫ জন। এ ঘটনায় মুজিবুর রহমান নামে ১ জনকে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ। অপরাধীদের ধরতে ক্যাম্পগুলোতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে। শুক্রবার ভোরে উখিয়ার ১৮ নং ক্যাম্পের ব্লক এইচ-৫২ এর জাফরইজ্জা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আরসা বনাম আরএসও মতাদর্শ, মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালান এবং আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মূলত এ ঘটনার সুত্রপাত বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি।
নিহতরা হলেন- রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে-৫ এর বাসিন্দা ও মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মো. ইদ্রিস (৩২), ক্যাম্প-৯ ব্লক-১৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (২৪), ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এইচ-৫২ এর নুরুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসার ছাত্র আজিজুল হক (২২), একই ক্যাম্পের ভলান্টিয়ার আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমীন (৩২)।
তাছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ‘এফডিএমএন’ ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২ এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪ এর রহিম উল্লাহর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫)।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি শিহাব কায়সার খান বলেন, অস্ত্রসহ মুজিবুর রহমান নামে একজনকে আমরা আটক করেছি। শুক্রবার (গতকাল) ভোররাতে ‘এফডিএমএন’ ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায়। হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত ৪ জন মারা যায়। ঘটনা জানতে পেরে ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৩ জন মারা যায়। এসময় পুলিশ হামলাকারীদের একজনকে একটি দেশীয় লোডেড ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরিসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। ঘটনার পরপরই ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা মাদ্রাসা ও আশপাশের এলাকায় ব্লক রেইড পরিচালনা করে আসছে’। খবর পেয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ৭টি মৃতদেহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে উখিয়া থানায় আনা হয়েছে। সেগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে ময়না তদন্তের জন্য। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে