আজ : শনিবার ║ ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শনিবার ║ ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

‘পিআর নির্বাচনে দেশে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে’

দেশচিন্তা : পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি প্রদান এবং অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচী হিসেবে কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় কক্সবাজার পাবলিক হয় ময়দানে জেলা সভাপতি মুহাদ্দিস আমিরুল ইসলাম মীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও গণমিছিল পাবলিক হল ময়দান থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হাশেমিয়া মাদরাসার সামনে শেষ হয়। এতে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদ। জেলা সেক্রেটারী এ আর এম ফরিদুল আলম ও জয়েন্ট সেক্রেটারি মুস্তাফিজুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ইসলামি যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক (চট্টগ্রাম বিভাগীয়) সম্পদক তাজুল ইসলাম শাহীন,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সহসভাপতি মাওলানা ক্বারি আবদুল খালেক নেজামী, ইসলামী যুব আন্দোলন কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম আজিজী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।

অন্যানদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সহসভাপতি মাওলানা নেজামুর রহমান সোলাইমানী, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রিদওয়ানুল কবির,ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাষ্টার আবদুল খালেক নিজামী, প্রশিক্ষক সম্পদক ক্বারি আবু নাসের,অর্থ সম্পাদক কোরবান আলী, সহ অর্থ সম্পাদক মোঃ ফারুক, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মাওঃ শাকের আহমদ অজীম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ এস এম ইসমাইল ,সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক মুহাম্মদ জুবাইর, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কক্সবাজার জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ জিয়াউল হক প্রমুখ সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সভাপতি সহ অন্যান্য দায়িত্বশীলবৃন্দ।

পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না; জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে। একটি সুন্দর দেশ গঠন হবে। জবাবদিহিতার অভাবেই ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ হ্রাস পাবে এবং সংলাপের সংস্কৃতি সৃষ্টি হবে। তাছাড়া প্রতিটি ভোটের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হবে । সকল দল-মতের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার তৈরি হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইনী স্বীকৃতি ও পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন দেওয়া যাবে না। “বিগত ৫৪ বছরে যে নির্বাচন পদ্ধতি চালু ছিল তা সংস্কারের প্রধান লক্ষ্যই হলো পিআর পদ্ধতির বাস্তবায়ন। বিশ্বের বহু দেশে এ পদ্ধতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কালোটাকার দৌরাত্ম্য, মাস্তানি, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বন্ধ করার একমাত্র উপায়ও এটি। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষই পিআর চায়। আজ এটি জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। এই সরকারের আমলেই জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে, কারণ পরবর্তী কেউ তা বাস্তবায়ন করবে এমন আশা করা যায় না। প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন সংস্কার না হলে দেশ আগের ধারায় ফিরে যাবে; আবার তিনি জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিশ্চিত না করেই নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়- কার চাপে তিনি গণমানুষের প্রত্যাশা উপেক্ষা করলেন?” গত ১৫/১৬ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনো দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। কারণ কোন অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে কোন সুযোগ করে দেয়া যাবে না। নেতৃবৃন্দ আরে বলেন ৫ আগষ্টের পরে রাজনৈতিক হানাহানিতে নিহত-আহত মানুষের সংখ্যা শুনে আঁতকে উঠতে হয়। চাঁদাবাজী কোন অর্থেই কমে নাই। সন্ত্রাসও কমে নাই। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিডফোর্ট হাসপাতালের সামনে যে বর্বরতায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে জনতা ফুঁসে উঠেছে স্বাভাবিক কারণেই।

চাঁদাবাজী ও রাজনৈতিক দস্যুতা জুলাই বিপ্লবের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমাদের সন্তানরা বিপ্লব করেছিল। সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতির আমূল সংস্কার হবে। পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে। প্রতিহিংসা দূর হবে এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু ক্ষমতা লোভী কিছু মানুষ ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করায় সুস্থ রাজনীতির প্রত্যাশা আজ ফিকে হয়ে গেছে। সোহাগ হত্যা তার একটি দৃষ্টান্ত। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক ইস্যুতে আমরা কোনভাবেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছি না।জুলাই’২৪ এর বিপ্লব ছিল নতুন বাংলাদেশ আবিস্কার। বিপ্লবীদের শ্লোগান ছিল উই ওয়ান্ট জাস্টিজ। ইমাম-খতীবদের জুমার খুতবা ছিল ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। আমরা আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক বাক্সে ভোটের মাধ্যমে সেই কাঙ্খিত ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।
জনতার সেই প্রতিবাদকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বর্বর সেই হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করে ফেলা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে মানুষ এই ধরণের রাজনীতি দেখতে চায় না। এই ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতদের একটা বড় অংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিএনপি কর্তৃক তাদের বহিস্কারের মাধ্যমে এটা প্রমানিতও বটে। তাই বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলবো, কর্মীদের অপরাধের দায়ভার দল হিসেবে আপনাদের বহন করতেই হবে। চাঁদাবাজরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা দেখিয়েই জনতার কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। তাই জনতার ক্ষোভ বিএনপির প্রতি হবে এটা স্বাভাবিক। জনতার এই প্রতিবাদকে প্রতিপক্ষ না বানিয়ে দলের ভেতরে থাকা অপরাধীদের চিহ্নিত করুন। অপরাধ ঘটার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ