আজ : সোমবার ║ ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের পাঁচ গুণিজন একুশে পদক পাচ্ছেন

দেশচিন্তা ডেস্ক : মহান মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, শিল্পকলা, ভাষা সাহিত্য ও সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ গুণিজন এবার একুশে পদক পাচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আইরীন ফারজানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এবারের একুশে পদকপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

 

চট্টগ্রাম থেকে এবার তালিকায় রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিংয়ে কাওসার চৌধুরী, শিক্ষায় প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু, শিল্পকলায় (সংগীত) বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ, ভাষা ও সাহিত্যে মিনার মনসুর এবং সমাজসেবায় লায়ন রফিক আহমদ।

 

প্রামাণ্যচিত্রকার ও নাট্যাভিনেতা কাওসার চৌধুরীর বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালীর উপজেলার মাতারবাড়িতে। পড়ালেখা সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম শহরেই। চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক কাওসার চৌধুরী ১৯৮১ সাল থেকে দীর্ঘ ৪১ বছরে অসংখ্য প্রামাণ্যচিত্র, তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলে নাটক, সিরিয়াল, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানসহ তিন শতাধিক অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। নব্বইয়ের দশক থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়ে মনোযোগী হন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বধ্যভূমি নিয়ে অসংখ্য প্রামাণ্যচিত্র, তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন এবং দুর্লভ প্রামাণ্যচিত্র, তথ্যচিত্রগুলো একুশে টেলিভিশনসহ বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত হয়।

 

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক শিল্পী কল্যাণী ঘোষ। জন্ম থেকেই পারিবারিকভাবে সাংস্কৃতিক আবহে বেড়ে উঠেছেন। সংগীতের অমিয় ধারায় নিজেকে সিক্ত করার পাশাপাশি গড়ে তুলেছিলেন কিছু সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার জাদুকরী কণ্ঠে উজ্জীবিত করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের। বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার বিনাজুরিতে। ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’সহ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনেক গানের শিল্পী তিনি। সংগীতশিল্পী প্রবাল চৌধুরী, উমা খান ও কল্যাণী ঘোষ আপন ভাই-বোন। একসময় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে নিয়মিত গান করতেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের চেয়ারম্যান জিনবোধি ভিক্ষু। আনোয়ারায় ‘আন্তর্জাতিক নবপণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের উদ্যোক্তা তিনি।

মিনার মনসুরের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ার বড়লিয়া গ্রামে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক তিনি। ‘এই অবরুদ্ধ মানচিত্রে’, ‘অনন্তের দিনরাত্রি’ , ‘অবিনশ্বর মানুষ’ সহ একাধিক কাব্যগ্রন্থ, প্রবন্ধ বই রয়েছে তাঁর।

দীর্ঘ বছর ধরে সমাজ উন্নয়নে কাজ করছেন রফিক আহমদ। তিনি চট্টগ্রামের বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘মমতা’র প্রধান নির্বাহী। প্রতিষ্ঠানটি পরিবার পরিকল্পনা এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে থাকে। হাজারো গরিব মায়ের ঠিকানা ‘মমতা’।

 

চট্টগ্রামের এই পাঁচজন ছাড়াও এবার ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে মরণোত্তর একুশে পদক পেয়েছেন মৌ. আশরাফুদ্দীন আহমদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী মিয়া (মরণোত্তর)।
শিল্পকলার সংগীতে পেয়েছেন জালাল উদ্দীন খাঁ (মরণোত্তর), বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর), এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর) ও শুভ্র দেব। অভিনয়ে ডলি জহর ও এমএ আলমগীর, আবৃত্তিতে খান মো. মুস্তাফা ওয়ালীদ (শিমুল মুস্তাফা) ও রূপা চক্রবর্তী, নৃত্যকলায় শিবলী মোহাম্মদ, চিত্রকলায় শাহজাহান আহমেদ বিকাশ এবং সমাজসেবায় মো. জিয়াউল হক।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সবাইকে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি করে পদক, চার লাখ টাকা ও একটি সম্মাননা পত্র দেওয়া হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ