আজ : মঙ্গলবার ║ ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : মঙ্গলবার ║ ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ║ ১৮ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের লুপর্ণা মুৎসুদ্দি মাতালেন কুষ্টিয়ায় লালন উৎসব

তিনদিনব্যাপী লালন উৎসব ছিলো ভক্তদের সমাগম রাতদিন। বিকেল হলেই শুরু হয় আলোচনা সভা, সন্ধ্যা থেকে সারারাত চলে সংস্কৃতিক সন্ধ্যা। নীরব শ্রোতার সমাগম দেখলেই হৃদয় জুড়িয়ে যায়।
লালন শাহের মাজ রের আশপাশে তাবু টাঙিয়ে অবস্থান ভক্তদের। সেখানেও চলছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঙ্গীত পরিবেশনা, প্রার্থনা ও সাধুদের মুরিদান সেবাসহ নানান রকম আয়োজন।
এছাড়াও লালন একাডেমীর মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় লালন সঙ্গীত চর্চা কেন্দ্রের পরিচালক আক্কাস সাই এর পরিচালনায় দেশ বরেণ্য লালন শিল্পী ও লালন একাডেমির শিল্পীরা লালন সংগীত পরিবেশনা। এতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন, করেন সফী মন্ডল, টুনু বাউল, কাঙালিনী সুফিয়া, বাবুল ফকির, বারেক পাগল, চট্টগ্রামের অতিথি শিল্পী লুপর্ণা মুৎসুদ্দি, বান্দারবানের শিল্পী দিলীপ বড়ুয়া, রাখি শবনব, দিলরুবা খানম বর্ষা, লালন পুতুল, ইতি ইব্রাহীম, তানিয়া ইসলাম, নদীয়া পারভীন, রীতা সরকার, আমীর আলী, মীম, শান্তা, শিরিন সুলতানা, তানিম, শান্তিসহ আরো অনেকে।

প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। তিনি বলেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ জাতপাত বিশ্বাস করতেন না। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ ছিলেন মানব ধর্মের পূজারিণী। তিনি জাতপাত বিশ্বাস করতেন না। তিনি হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের জন্য মিলিয়ে একটি ধর্মের প্রবর্তন করেছিলেন। যেটি মানবধর্মই পরম ধর্ম।

তিনি বলেন, ‘লালনের সাথে মানুষের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। লালন শাহর মতো মানুষকে বিশ্বের কাছে উচুঁ করে পৃথিবীর মধ্যে আরেকটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি।

০৮ মার্চ রবিবার থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়িতে দোল পূর্ণিমার রাতে আনুষ্ঠানিভাবে স্মরণোৎসবের উদ্বোধন কারেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে, পশুপাখি, গাছপালা, প্রকৃতিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। তবেই আজকে লালনের এই স্মরণোৎসবে আসা স্বার্থক হবে।’
দেশের মধ্যে একটি কালচার ইউনিভার্সিটি হতে পারে। এবং সেটি এই কুষ্টিয়ায় হতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, এসময় তিনি বলেন, বিশ্ববরেণ্য লালন সাইজি আমাদের ধন্য করেছেন। তিনি বিশ্বজয়ী পাঠশালা করেছেন সেখানে মানুষ ছাড়া আর অন্য সবকিছু গুরুত্বহীন। নিজেকে চেনো তাহলে অন্যকে চিনতে তোমার সহজ হবে লালনের এই মর্মবাণী সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতলেই কেবল দেখবেন মানুষ মানুষের আত্মার পরম হয়ে উঠেছে।
লালন গানের ভেতর দিয়ে তার আদর্শ ও বাণী গুরু শিষ্য পরম্পরা প্রকাশ করেছেন। আজ আমরা কুষ্টিয়াবাসী ধন্য লালন সাঁইজির মত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন ব্যক্তিত্ব এখানে এসে আমাদের আলোকিত করেছেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী, কুষ্টিয়া কোর্টের জিপি আখতারুজ্জামান মাসুম, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন কুষ্টিয়ার ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওবায়দুর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি মোঃ আসলাম হোসেন। মূল মঞ্চে আলোচনা সভা শেষে শুরু হয় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহর আধ্যাত্মিক গানের আসর।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ