
দেশচিন্তা ডেস্ক: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য যারা তৎপর হয়ে উঠেছে, সরকারকে তাদের বিচার করতে হবে। যারা প্রথম আলো-ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপর যারা হামলা করেছে, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের রায় ছিল বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে। কিন্তু কোনো জবরদস্তি কায়েম করা চলবে না। গণমাধ্যমের উপর হামলা মানে গণতন্ত্রের উপরে হামলা। আর একটি রাষ্ট্র যে গণতন্ত্রের উপর দাঁড়িয়ে আছে, তার উপর হামলা।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে এবং তার শাহাদাতের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে শোক এবং ক্ষোভের জন্ম হয়েছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ ওসমান হাদির হত্যার বিচার চায়। মানুষ ক্ষুব্ধ এবং এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে একদল গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক লক্ষ্য পতিত ফ্যাসিস্টদের দেখিয়ে, গণতন্ত্রের পথে না হেঁটে, তারা নিজেরা আরেকটা ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী হয়ে উঠতে চায়। তারা নিজেরা আরেকটি মতাদর্শ জবরদস্তি কায়দায় চাপিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে চায়। এজন্য তারা বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে সংবাদ মাধ্যমও সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা করছে। তারা রাতের বেলায় ঘোষণা দিয়ে পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা দেখলাম সরকার সেক্ষেত্রেও রহস্যজনকভাবে নীরব। সরকারের কোন কোন উপদেষ্টা সেখানে গিয়েছেন এবং কি দায়িত্ব পালন করেছেন? সেই জবাবদিহি সরকারকে করতে হবে। যারা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করতে চায়, সরকার কি সেটাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে?’
তিনি আরও বলেন, ‘ওসমান হাদির উপর হামলাকারীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য সরকার দিতে পারছেন না। আজকে এ পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে পতিত ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আবারও ভয় ধরিয়ে, সামনে আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের কাজকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এটা অত্যন্ত পরিষ্কার ঘোষণা এবং ওসমান হাদিকে হত্যা করে তারা আরো অনেককে হুমকি দিয়ে এবং এই ধরনের হামলা চালিয়ে এমন একটা ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়, যাতে এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ না থাকে।’
গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘কে কখন গুলিবিদ্ধ ও হামলার শিকার হবেন, কিন্তু সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে না। পতিত ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশের মধ্যে একটা অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। নির্বাচন বানচাল করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলতে চায়। তারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রমাণ করতে চায় যে, তারা না থাকলে দেশ অরাজক হয়ে যায়। বাংলাদেশে এখন এটাই তাদের লক্ষ্য। তারা এখনো দেশকে ধ্বংস করা থেকে সরে আসেনি। তারা এদেশকে আবারও চূড়ান্ত বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে চায়। পতিত ফ্যাসিস্টরা বসে নেই, তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করতে চায়।’
সাকি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের জাতিবাদী ফ্যাসিবাদ গ্রহণ করেনি। কোন একটি শক্তি যদি আজকে ধর্মবাদী ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, মানুষ সেটাকেও গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশ পরিষ্কারভাবে গণতন্ত্রের পথে যাবে— এটাই অভ্যুত্থানের শত শহীদের রক্তের ঋণ। সরকারকে বলতে চাই— ওসমান হাদিকে যারা হত্যা করেছে, তাদেরকে অবশ্যই গ্রেপ্তার করে বিচার করতে হবে। জুলাইয়ে যত হত্যা হয়েছে সবগুলোর বিচার করতে হবে। আপনারা (সরকার) বিচারের কাজকে যদি এগিয়ে নিতে না পারেন, ওসমান হাদির হত্যাকারীদেরকে যদি গ্রেপ্তার করতে না পারেন, তাহলে জবাবদিহি আপনাদেরও করতে হবে।’










