
দেশচিন্তা ডেস্ক: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে বৈধভাবে সিম কার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে সোমবার (১০ নভেম্বর) কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
প্রথম দিন রোহিঙ্গা সংগঠন ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং (ইউসিআর)-এর নির্বাচিত সভাপতি ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের হাতে বৈধ সিম কার্ড হস্তান্তর করা হয়।
আরআরআরসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে ক্যাম্পগুলোতে ১০ হাজার সিম কার্ড বিতরণ করা হবে এবং ধীরে ধীরে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দ্বারা বর্তমানে ব্যবহৃত সমস্ত অবৈধ সিম কার্ড সম্পূর্ণরূপে ব্লক করা হবে। শুধুমাত্র বৈধ সিম কার্ড ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে। এটি আইনের শাসন বজায় রাখা, অপরাধমূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করা এবং পূর্বে অবৈধ সিম কার্ড ব্যবহার করে পরিচালিত অনৈতিক অনুশীলন বন্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
সরকারি সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের সিম কার্ড অবৈধভাবে ব্যবহার করে আসছে। এতে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের বৈধ সিম ব্যবহারের সুযোগ দিতে গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার আলোচনা শুরু করে।
সেই সময় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চারটি মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সিম বিতরণ নিয়ে বৈঠক করে। সেই আলোচনার ধারাবাহিকতায় সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সিম কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলো।
যেভাবে সিম কার্ড দেয়া হচ্ছে
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাধারণভাবে সিম বিক্রির ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক যাচাই প্রয়োজন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের সে ধরনের পরিচয়পত্র না থাকায় তাদের জন্য বিকল্প পদ্ধতি চালু হয়েছে। মোবাইল অপারেটররা রোহিঙ্গাদের জন্য বিশেষ নম্বর সিরিজ নির্ধারণ করেছে।
জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) কাছে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন নম্বর বা ‘প্রোগ্রেস আইডি’ রয়েছে। এই আইডির ভিত্তিতে ১৮ বছরের বেশি বয়সি রোহিঙ্গারা সিম পাচ্ছেন।
সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ইউএনএইচসিআরের ডেটাবেজ সংরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ডেটা সেন্টারে। পরবর্তীতে এই তথ্য সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শেষে রোহিঙ্গাদের জন্য পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথম ধাপে ১০ হাজার নম্বর বরাদ্দ দিয়ে বিতরণ শুরু হয়েছে।














