আজ : সোমবার ║ ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সাবেক মুখ্য সচিব কামাল সিদ্দিকীর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

দেশচিন্তা ডেস্ক: সাবেক মুখ্য সচিব, বিশিষ্ট প্রশাসক, অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (৩ নভেম্বর) এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কামাল সিদ্দিকী ছিলেন প্রশাসন, উন্নয়নচিন্তা ও একাডেমিক গবেষণার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন একজন সৎ, দূরদর্শী ও নিষ্ঠাবান সরকারি কর্মকর্তা, যিনি দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে আধুনিকায়নের জন্য কাজ করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক ও নীতিনির্ধারক হিসেবে তার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কামাল সিদ্দিকীর সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল। আমরা প্রায়ই দেশের ভবিষ্যৎ, প্রশাসনিক সংস্কার ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করতাম। তিনি ছিলেন নীতিবান, বিনয়ী ও দেশপ্রেমিক এক মানুষ। ব্যক্তিগতভাবে আমি একজন প্রিয় বন্ধু ও প্রজ্ঞাবান সহযাত্রীকে হারালাম।

দুঃখপ্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের বৈরি ও প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির কারণে তাকে বহুবার দেশ ছাড়তে বাধ্য হতে হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাকে একাধিক মামলায় হয়রানি সহ্য করতে হয়েছে, যা ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক। তবুও তিনি কখনও তার মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম থেকে সরে আসেননি।

সরকারপ্রধান বলেন, কামাল সিদ্দিকী বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একজন কিংবদন্তি কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি যে নিষ্ঠা, সততা এবং দক্ষতার সঙ্গে সারাজীবন দায়িত্ব পালন করেছেন, তা বাংলাদেশের সকল সরকারি কর্মকর্তার জন্য অবশ্য অনুসরণীয়। এটা ভাবতে অবাক লাগে যে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নশাস্ত্রে বিএসসি এবং এমএসসি পাস করেছেন, কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেছেন। তার জ্ঞানস্পৃহা ছিল অদম্য।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, কামাল সিদ্দিকী অসংখ্য গবেষণাভিত্তিক বই লিখে তার পাণ্ডিত্যের পরিচয় রেখে গেছেন। তার তিন খণ্ডের আত্মজীবনী বাংলাদেশের সমাজ, মানুষ এবং রাষ্ট্র ও সরকারের একটি আন্তরিক ও অকপট দলিল। বিভিন্ন গবেষণা গ্রন্থে তিনি তার কৌতূহলী মনের সক্রিয়তার স্বাক্ষর রেখেছেন।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির সদস্য হিসেবে ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে মাস্টার্স এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (SOAS) থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ