আজ : সোমবার ║ ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২১শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

কারা সেই জিম্মি— যাদের মুক্তি দিচ্ছে হামাস

দেশচিন্তা ডেস্ক: গাজায় দীর্ঘদিন ধরে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে কয়েক ডজনকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) এই বন্দিমুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, হামাস প্রায় ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, আর তার বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গাজায় হামাসের হাতে বর্তমানে ৪৮ জন জিম্মি রয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকি ২৬ জনকে ইতোমধ্যে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২ জন। নিহতদের কেউ অপহরণের সময়েই মারা যান, কেউ হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। কেউবা ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বেঁচে থাকা জিম্মিদের বেশিরভাগই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলের কিবুৎজ রেইমের কাছে অনুষ্ঠিত ‘নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’ থেকে অপহৃত হয়েছিলেন। ওই উৎসবে হামাসের হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হন এবং অনেককে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।

জিম্মিদের মধ্যে একজন, ২৪ বছর বয়সী এভিয়াটার ডেভিড, যাকে গত আগস্টে হামাস প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে মাটি খুঁড়তে। ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, তিনি নিজ কবর খুঁড়ছেন। একইভাবে ২৪ বছর বয়সী পিয়ানোবাদক অ্যালন ওহেল এবং ৩২ বছর বয়সী অ্যাভিনাটান অরও অপহৃত হয়েছিলেন ওই উৎসব থেকে।

বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয় অ্যাভিনাটান অর ও তার প্রেমিকা নোয়া আর্গামানির একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায় হামাস যোদ্ধারা তাদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। নোয়া কাঁদতে কাঁদতে জীবন ভিক্ষা চাইছেন। পরে ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েলি বাহিনী তাকে গাজা থেকে উদ্ধার করে।

জিম্মিদের মধ্যে আরও আছেন গাজার কাছের কয়েকটি কিবুত্জ এলাকার সাত বাসিন্দা। এর মধ্যে যমজ ভাই-বোন গালি ও জিভ বারম্যান (২৮), এরিয়েল কুনিও (২৮) ও তার ভাই ডেভিড কুনিও (৩৫)। ডেভিডের স্ত্রী শ্যারন ও তাদের দুই কন্যাসন্তানকেও অপহরণ করা হয়েছিল। পরে ২০২৩ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির সময় তাদের তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়।

জিম্মিদের তালিকায় রয়েছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দুই সদস্যও— ম্যাটান আংগ্রেস্ট (২২) ও নিমরড কোহেন (২০)। তারা হামলার দিনই হামাসের হাতে বন্দি হন।

এছাড়া হামাসের হাতে চারজন বিদেশি নাগরিকও ছিল। এদের মধ্যে তানজানিয়ার এক ছাত্র এবং থাইল্যান্ডের দুই শ্রমিক নিখোঁজ থাকার পর মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। নেপালের ছাত্র বিপিন যোশী এখনও নিখোঁজ।

ইসরায়েল জানিয়েছে, যেসব জিম্মি মারা গেছেন, তাদের মধ্যে একাধিকজনকে ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনাক্ত করা হয়েছে। একজন নিহত সেনাও রয়েছেন, যিনি ২০১৪ সালের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের সময় নিখোঁজ হন। বাকিরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার দিন বা পরবর্তী সময়ে বন্দি হয়েছিলেন।

হামাস বলেছে, নিহতদের মরদেহ শনাক্ত ও উদ্ধার করতে আরও সময় লাগবে। এ জন্য একটি আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যারা উদ্ধার ও সনাক্তকরণে সহায়তা করবে। সূত্র: রয়টার্স

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ