আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

চট্টগ্রাম বিভাগেই টাইফয়েড টিকা পাবে প্রায় এক কোটি শিশু

দেশচিন্তা ডেস্ক: দেশব্যাপী শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে রোববার (১২ অক্টোবর) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হেসেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়া উদ্দিন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হোসেন।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিশুর স্বাস্থ্যসুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। টাইফয়েড একটি প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ, যা দূষিত পানি ও অপরিচ্ছন্ন খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ায়। প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিশু টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় প্রায় ছয় হাজার শিশু। সরকার ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই টিকাদান কর্মসূচি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য উদ্যোগগুলোর একটি। শুধু চট্টগ্রাম বিভাগেই টিকা পাবে ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৪১ শিশু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত, নিরাপদ এবং অত্যন্ত কার্যকর। পাকিস্তান, নেপাল ও ভারত এরইমধ্যে এই টিকা সফলভাবে প্রয়োগ করছে। এই টিকা ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডের ঝুঁকি কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। ইপিআই কর্মসূচির আওতায় নতুন এই টিকা যুক্ত হওয়ায় প্রতিবছর আরও ৬ হাজার শিশুর জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে। সরকার বিনামূল্যে এই টিকা দেবে—এক ডোজেই কার্যকর সুরক্ষা পাওয়া যাবে।

টিকা নিতে শিশুদের জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। যাদের জন্মনিবন্ধন নেই, তাদের তালিকা করে বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেওয়া হবে। টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রথম দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পরবর্তী সময় কমিউনিটি পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, টিকাদান-পরবর্তী কোনো জটিলতা মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিশেষ চিকিৎসা দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকা গ্রহণের পর সামান্য জ্বর, ব্যথা বা ক্লান্তি দেখা দিতে পারে, যা স্বাভাবিক।

বক্তারা বলেন, এই টিকা নিয়ে কোনো গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে সবাইকে নিশ্চিন্তে টিকা নিতে হবে। টাইফয়েড টিকা হালাল এবং এটি সৌদি হালাল সেন্টার কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে টিকার সঠিক তথ্য পৌঁছাতে মাল্টিমিডিয়া প্রচারণা চলছে। শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা, সংবাদকর্মী, স্কাউট ও গার্লস গাইডসহ বিভিন্ন অংশীজনকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ