
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানা এলাকায় চার বছর আগে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মাহাবুবা আক্তারকে হত্যার ঘটনায় ভাড়াটে খুনি মো. আরিফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার (২৪ আগস্ট) সংস্থাটির চট্টগ্রাম মেট্রোর একটি টিম নগরের আতুরার ডিপো বেলতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।
পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালের ১৬ জুলাই জুমার নামাজের পর নগরের ইপিজেড থানাধীন নারিকেলতলায় ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মাহবুবাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মিশকাত বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ভুক্তভোগীর শাশুড়ি নাজনিন বেগম দেড় লাখ টাকায় আরিফকে ভাড়া করে পুত্রবধূকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী আরিফ আরও তিনজন সহযোগী ভাড়া করেন। ঘটনার দিন দুপুরে মাহাবুবা নামাজ পড়ার সময় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় স্বামী আব্দুল গোফরান ও শাশুড়ি নাজনিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
পিবিআই জানায়, ঘটনার পর আসামিরা হত্যাকে ডাকাতির ঘটনা হিসেবে প্রচার করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ইপিজেড থানা পুলিশ প্রথমে গোফরান ও নাজনিনকে গ্রেপ্তার করলেও আরিফ দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। একপর্যায়ে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর পলাতক আসামি আরিফসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। কিন্তু আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোকে নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহসীন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আসামি আরিফ ইপিজেড থানা এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিনি ভুক্তভোগীর শ্বশুরবাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এ সুবাদে তার সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তিনি তাদের বাজারও করে দিতেন। ঘটনার আগে ভুক্তভোগীর শাশুড়ি ও স্বামী ঘাতক আরিফকে ভাড়া করেন। আরিফ তার তিন সহযোগীকে নিয়ে ভুক্তভোগীকে হত্যা করেন। চুক্তি অনুযায়ী আরিফ দেড় লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন পর আরিফকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সোমবার (২৫ আগস্ট) আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি আরও তিনজনের নাম প্রকাশ করেছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।