
দেশচিন্তা ডেস্ক: মিরসরাইয়ের সায়েদ আলম প্রকাশ সাঈদ (৩৫) হত্যার ১ বছর পর মামলার রহস্য উদঘাটন ও ২ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, গত বছরের ১৩ আগস্ট জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ সোনাপাহাড় এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার পূর্বে সোনাপাহাড়ের পাদদেশ হতে একটি খন্ড বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে। যা গত বছরের ৫ আগস্ট হতে নিখোঁজ সায়েদ আলম প্রকাশ সাঈদ আলম (৩৫) এর বলে পরিবার দাবি করে। পরিবারেরর পক্ষ হতে তার ভাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার ঘটনা পরবর্তী ডিএনএ পরীক্ষা সহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারনামীয় ১নং আসামী মোঃ ইমাম হোসেন কে গত ১১ আগস্ট গ্রেফতারের পরে জিজ্ঞাসাবাদে সায়েদ আলম হত্যার সহিত নিজে জড়িত থাকলেও স্বীকারোক্তি প্রদান করে নাই। কিন্ত মামলার ঘটনা সম্পর্কে মোঃ ইমাম হোসেন তার শশুর ও সাকিবের পিতা মোঃ জসিম ঘটনার বিষয়ে জানালে জসিম ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে এবং নিজের মেয়ের জামাই ও ছেলের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষী হিসাবে ফৌজদারি কার্য বিধি ১৬৪ ধারা মতে জবানবন্দি প্রদান করলে মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে অপর পলাতক আসামী জসিমের ছেলে মোঃ শাকিব (২১) কে র্যাব-১১ এর সহায়তায় গত ১৫ আগস্ট নোয়াখালীর চাটখিল থানা এলাকা হইতে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সায়েদ আলম, সাকিব ও ইমাম পরষ্পর বন্ধুর মত ছিলো এবং প্রায় ২ বছরের জানাশুনা ছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় অপরাধ কর্মের সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু শাকিবকে সায়েদ আলম কর্তৃক চুরির অপবাদে মারধর এবং সায়েদ আলম শাকিবের শিশু ছেলেকে আটক করে শ্বাশুরীর নিকট হইতে ৫০০০ টাকা আদায় করার ঘটনার জের ধরে ধীরে ধীরে সায়েদ আলমের প্রতি শাকিবের চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় গত বছরের ৫ই আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের দিনকে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়ে রাত অনুমান ১১টার দিকে সাকিবের বোন জামাই ইমামের মাধ্যমে সায়েদ আলমকে ইমামের খামারে ডেকে নিয়ে এসে মাদক সেবন করায়। একপর্যায়ে সায়েদ আলম মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে আসামী শাকিব পিছন দিক থেকে ধারালো রামদা দিয়া সায়েদের মাথায় কোপ মারে, সায়েদ মাথায় হাত দিলে শাকিব আবারো কোপ মারে। ঐ কোপে সায়েদের বাম হাতটি কেটে শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরপর শাকিব আরেকটি কোপ মারলে সায়েদ আলম মাটিতে পড়ে যায়। তখন ইমাম হোসেন সায়েদ আলমের গলা কেটে জবাই করে। পরবর্তীতে শাকিব ও ইমাম হোসেন সায়েদ আলম এর মৃতদেহ বস্তায় ভরে কচ্ছইব্যা ঘোনা সোনা পাহাড়ের পাদদেশে ফেলে দেয়। এই বিষয়ে আসামী মোঃ শাকিব বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারামতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।