
সারাদেশে বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক-মহাসড়কে সৃষ্ট ছোট বড় গর্তে কারনে দ্রুতগামী যানবাহনে ভয়াবহভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। জরুরীতে ভিত্তিতে এসব সড়ক-মহাসড়ক মেরামতের উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি সহনশীল সড়ক নির্মাণ ও মেরামতের কৌশল উদ্ভাবনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার (১২ আগষ্ট) দেশের গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবী জানান। বিবৃতিতে জুলাই মাসের সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, বিদায়ী জুলাই মাসে দেশের গণমাধ্যমে ৫০৬ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত, ১৩৫৬ জন আহতের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই মাসে রেলপথে ৩৪ টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত, ৪১ জন আহতের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। তথ্যমতে, নৌ পথে ১৪ টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জন, আহত ১৪ জন ও ০৫ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৫৪ টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত এবং ১৪১১ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ১৬২ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন নিহত, ১৪৪ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.০১ শতাংশ, নিহতের ৩২.৫০ শতাংশ ও আহতের ১০.৬১ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১২২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ২৯৫ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে ২৩ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৯৫ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ০৯ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৩১ জন চালক, ৯৭ জন পথচারী, ৬৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন শিক্ষার্থী, ০১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ০৫ জন শিক্ষক, ৭৮ জন নারী, ৬০ জন শিশু, ০১ জন সাংবাদিক, এবং ০৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- ০২ জন পুলিশ সদস্য, ০১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ১২০ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৯০ জন পথচারী, ৭০ জন নারী, ৫৬ জন শিশু, ৫০ জন শিক্ষার্থী, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ০৫ জন শিক্ষক ও ০৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৭৪৮ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৬.০৬ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪.১৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৬.৮৪ শতাংশ বাস, ১৪.৮৩ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৬.২৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৬.৮১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৪.৯৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৮.২২ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৬.০৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯.৯৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৪.৩৪ শতাংশ বিবিধ কারনে, চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৫৯ শতাংশ, এবং ০.৭৯ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪০.৩১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৯.২৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪.১১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪.৭৪ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৭৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৭৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।