
বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ৪০ তম বার্ষিক সভা ও নির্বাচিত বেসরকারী মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৬ তলা বিশিষ্ট একাডেমি ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি বলেন, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতার অনুশীলন ও চর্চার ক্ষেত্রে বায়তুশ শরফ স্বতন্ত্র মহিমায় ভাস্বর এক ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান। ইসলামী জীবন ব্যবস্থাকে আত্মস্থ করার মাধ্যমে তাসাউফের বিশুদ্ধ চর্চা বায়তুশ শরফের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ দরবার মানুষের নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক বিশুদ্ধতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বায়তুশ শরফের গ্রহণযোগ্যতা আজ সার্বজনীন। বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার (রাহঃ) তাঁর অসাধারণ প্রজ্ঞা, অতুলনীয় কর্মশক্তি, ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও চারিত্রিক মাধুর্যতা দ্বারা সমসাময়িক আলেম ওলামাসহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। তিনি বায়তুশ শরফকে দাঁড় করিয়েছেন জাতিভিত্তিক একটি আধ্যাত্মিক ও সেবামূলক বিশাল প্রতিষ্ঠান রূপে। তিনি নিজেকে কেবল মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকায় আবদ্ধ না রেখে ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মতো মহতী কাজেও অসামান্য অবদান রেখেছেন, যা রীতিমতো বিস্ময়ের জন্ম দেয়। উপমন্ত্রী বলেন, আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার (রাহঃ) এর অনবদ্য সৃষ্টিকর্মের অন্যতম হচ্ছে, বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসা। জাতীয় পর্যায়ে তিনবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতি গঠনে অনন্য ভূমিকা রাখছে। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বরাবরই আলেম- ওলামাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি মাদ্রাসার উন্নয়নে সম্ভাব্য সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, ধর্ম ও কর্মের সমন্বয়ে একজন মানুষকে খাঁটি মুমিন মুসলমান রূপে গড়ে তোলা, ত্বরীকতের অনুসৃত পন্থায় মানবীয় গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বলে বলিয়ান করা-ই বায়তুশ শরফের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, বায়তুশ শরফের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা কুতুবুল আলম শাহ্ সুফী হযরত মাওলানা মীর মোহাম্মদ আখতর (রাহঃ), তাঁর স্থলাভিষিক্ত আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার (রাহঃ) এবং তাঁর দীর্ঘদিনের ছায়াসাথী বাহরুল উলুম আল্লামা শাহ মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (রাহঃ) এর অনুসৃত পথ ধরে বায়তুশ শরফের বর্তমান পীর শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী সম্মুখপানে এগিয়ে যাবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি ইসলামের প্রচার প্রসারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন, মডেল মসজিদ নির্মাণ, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন অবদানের কথা তুলেন।
প্রধান আলোচক ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ (আহসান সাইয়েদ) বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে বর্তমান সরকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি বলেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হলে আধুনিক শিক্ষার সাথে সমন্বয় রেখে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হবে। মাদরাসা শিক্ষায় অধিক দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল সৃষ্টি হবে।
৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটায় অনুষ্ঠিত রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য রাখেন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, সার্বিক তত্বাবধানে হাফেজ আমান উল্লাহ।