আজ : রবিবার ║ ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : রবিবার ║ ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় বন্ধ নিউজপ্রিন্ট মিলের স্ক্রাব বিক্রির নামে হরিলুটের অভিযোগ

খুলনার বন্ধ নিউজপ্রিন্ট মিলের স্ক্রাব বিক্রির নামে হরিলুটের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। ১২ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত স্ক্রাবের সঙ্গে মিলের অন্যান্য মালামাল নেওয়ার প্রস্তুতির সময় বিষয়টি একটি পক্ষের চোখে পড়ে। এরপর স্ক্রাব নেওয়া স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। মিলের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রতিদিন অতিরিক্ত মাল ট্রাকযোগে মিলের বাইরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ জানায়, সম্প্রতি বিসিআইসি ডিপিএমের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কল্যাণ ট্রাস্ট, সেনা কল্যাণ সংস্থা, ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্স এবং বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট– এই চারটি প্রতিষ্ঠানকে মিলের নির্ধারিত মালামালের অর্ডার দেয়। চুক্তি অনুযায়ী বিমান বাহিনী কল্যাণ ট্রাস্টকে ১১টি জাহাজ, সেনা কল্যাণ সংস্থাকে সাতটি বার্জ, ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার্সকে ১৭টি গাড়ি এবং পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টকে ২৮টি ক্রেনের অর্ডার দেওয়া হয়। এ চারটি প্রতিষ্ঠান নিজেরা মালামাল না নিয়ে সাব কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে অন্য চারটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের সাব কন্ট্রাকটর মজিবর আয়রন স্টিলের কর্মীরা ক্রেনের মালামাল নেওয়ার কাজ করেন। এ সময় তারা অন্যান্য গুদাম থেকে মালামাল সরিয়ে ক্রেনের মালামালের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর কাছে ধরা পড়ে। একইভাবে ডকইয়ার্ড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাব কন্ট্রাক্টর রাশেদুল ইসলাম তার কর্মীদের দিয়ে গাড়ির মালের সঙ্গে মিলের বিভিন্ন স্থানে রাখা ঢালাই মালামাল ভেঙে লুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। যা স্থানীয় মানুষের কাছে ধরা পড়ে।

মহানগরীর ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খোকন জানান, তারা অনেকবার অতিরিক্ত মালামাল নেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। মাঝে ভ্যানভর্তি মিলের মাল চুরি করে নেওয়ার সময় জনগণ হাতেনাতে ধরে দেয়। যা এখনও খালিশপুর থানায় রয়েছে।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হিসাব বিভাগের দ্বায়িত্বরতদের প্রতি এলাকাবাসীর অভিযোগের তীর। এলাকাবাসী আরও জানায়, রাতের আঁধারে নদীপথে মিলের মালামাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে মিলে চলছে হরিলুট।

১৩নং আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরর্শেদ আহমেদ মনি জানান, প্রতিনিয়ত মিলের মেশিনের দামি যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এলাকাবাসী জানায়, বন্ধ নিউজপ্রিন্ট মিলের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এসবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরাম উল্লাহ খন্দকার জানান, ১২ সেপ্টেম্বর স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে ডকইয়ার্ড ও পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের সাব ঠিকাদারদের স্ক্রাবের স্তূপে চুক্তির বাইরের মালামাল দেখতে পেয়েছেন। তিনি মালামাল নেওয়া তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। তবে যথাযথ তদারকি না করলে মিলের মালামাল যা আছে তাও লুটপাট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ