
গাজীপুরে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের তিন দিন পর জানা গেলো তিনি একজন পুলিশ সদস্য। নিহত শরীফ আহাম্মেদ (৩৩) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্য ছিলেন। নিজ কর্মস্থল এলাকায়ই তাকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
১২ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। নিহত শরীফ ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ঝিলকি এলাকার আলাউদ্দিন ফকিরের ছেলে। তার বাবাও পুলিশ সদস্য। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা শহর পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন।
গত ৪ মার্চ গাজীপুরের ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়েও পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পরে গত ৮ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূর্ব চন্দনা কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করা হয়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর ভূঞা জানান, আদালতের অনুমতির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। পরে শনাক্তের পর লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে কবর থেকে লাশটি তোলার আবেদন করেন সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান।
এসআই লুৎফর রহমান বলেন, ‘গলাকাটা লাশ উদ্ধারের পর তার পরিচয় জানার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। লাশের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা হলেও নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে ত্রুটি থাকায় লাশের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। এরপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চেষ্টা করে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। গত ৩ মার্চ শরীফ নিখোঁজের পর তার বাবা টঙ্গী পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সে প্রায় ছয় মাস আগে সেখানে যোগ দেন।’
নিহতের মামা আব্দুস সালাম বলেন, ‘৩ মার্চ নিখোঁজের পর শরীফের লাশ মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের চারদিন পর ৮ মার্চ বেওয়ারিশ হিসেবে একই জেলায় তাকে দাফন করা হয়। তখনও তার মুখ বিকৃত হয়নি। দেখেই স্পষ্ট বোঝা যায় এটি শরীফ। অথচ আধুনিক যুগে আধুনিক প্রযুক্তি থাকার পরেও তার সহকর্মীরা পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। অবশেষে বেওয়ারিশ হিসেবে নিজ কর্মস্থল এলাকায় দাফন করা হয় তাকে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’