
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন লায়ন আসলাম চৌধুরী। এই আসনে কাজী সালাহউদ্দিনের পরিবর্তে আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় গুলশানে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থীদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সূত্রে জানা যায়, বিএনপির এই সভায় সকল সংসদ সদস্য প্রার্থীদের অংশগ্রহণের জন্য বলা হলেও কাজী সালাহউদ্দিনকে জানানো হয়নি কোনকিছু। কাজী সালাহউদ্দিনের পরিবর্তে আসলাম চৌধুরীকে এই সভায় অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়।
গত ৩ নভেম্বর বিকfলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে সীতাকুণ্ড উপজেলা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৪ আসনে প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। ওই রাতেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এরপর টানা কয়েক দফায় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ কর্মসূচী করে আসছিলেন মনোনয়নের দাবিতে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সাল থেকে নানা অভিযোগে অন্তত চারবার গ্রেপ্তার হন আসলাম চৌধুরী। ২০১৬ সাল থেকে টানা জেলে ছিলেন প্রায় নয়টি বছর। হাসিনা সরকারের নির্দেশে ৭৬টি মামলা হয় তার নামে। যার বেশিরভাগ মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল বলে দাবি করেন তার আইনজীবী ও সমর্থকরা। সর্বশেষ তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুথানের পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, এই দীর্ঘমেয়াদি কারাভোগ আসলাম চৌধুরীকে দুর্বল করেনি, বরং তাকে আরও দৃঢ় ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন আসলাম চৌধুরী। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিষদ গঠন করেই বিএনপির রাজনীতিতে আসেন আসলাম চৌধুরী। ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। এর আগে, সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব হন। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৩ সালে তার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। ওইসময় সীতাকুণ্ডের নেতাকর্মীরা তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। হাসিনা ক্ষুদ্ধ হয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে সীতাকুণ্ডকে নরককুণ্ড আখ্যা দিয়ে পরে আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে। আসলাম চৌধুরী কারাগারে থাকাকালিন কার আপন দুই ভাইকে হারিয়েছেন। জানাযায় অংশ নিতে চাইলেও প্যারুলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।










