আজ : রবিবার ║ ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : রবিবার ║ ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

জনপ্রিয়তার কারণেই হয়তো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে হাদিকে : জামায়াত আমির

দেশচিন্তা ডেস্ক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের নির্ধারিত সময়েই হোক, সেটা প্রত্যাশা করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) ফজর নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করতে গিয়ে এই কথা জানান তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, ‘হাদির খুনিরা কার্যত বাংলাদেশেরই দুশমন। কারণ, হাদিরা বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলতো, দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের পক্ষে ছিল। হাদিরা আপন সংস্কৃতির কথা বলতো। তাদের উচ্চারণ ছিল অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাদিরা কোটি তরুণের প্রাণে দ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এই দেশ এই জাতি আমাদের। দেশ ও জাতির পাহারাদারও আমাদের করতে হবে। কোনো কালো চিলকে আমাদের ভাগ্যে ছোঁ মারার সুযোগ আর দেব না। এটা ছিল তাদের অঙ্গীকার। তারা বলেছিল জীবন দিবো তবুও চব্বিশ দিবো না, এটা কেন বলেছিল আমরা সবাই বুছি। এটাই তাদের অপরাধ।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘হাদি কারো দিকে অন্যায়ের হাত বাড়ায়নি, কারো ওপর জুলুম করেনি। হাদি সমবসময় ইনসাফের কথা বলেছে। এমনকি এটাও বলেছে- আমার শত্রুর প্রতিও বেইসনসাফি করতে চাই না। হাদি অনেকের অন্তরে জায়গায় করে নিয়েছিল। এই ভালোবাসাটাই সম্ভবত কারো কারো জন্য সহ্য করা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। এজন্য তারা ষড়যন্ত্র করে দুনিয়া থেকে তাকে উঠিয়ে দিয়েছে।’

যারা বিল্পবী তাদের খুন করে বিপ্লবের চেতনাকে খুন করা যায় না বরং সেই চেতনা আরও ছড়িয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেন জামায়াত আমির।

তিনি বলেন, ‘হাদির হত্যাকারীদের বিচারে সরকার এখন পর্যন্ত যা করেছে, তাতে জনগণ সন্তুষ্ট নয়। অতি দ্রুত খুনিদের গ্রেফতার করতে হবে এবং আইনের আওতায় আনতে হবে। যদি খুনিরা পার পেয়ে যায়, তাহলে আপনার আমার কারো জবীনই নিরাপদ বলা যায় না।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হোক, এ ব্যাপারে আমরা দৃঢ় আশাবাদী। এই লক্ষ্যে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবো। মূল কথা হলো নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু হয়, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, জনমতের প্রতিফলন ঘটে। এখানে যেন অন্য কিছু চিন্তা না করা হয়।’

গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের জন্য রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাদির মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করে। ২০ ডিসেম্বর দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতিতে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সন্ধ্যায় শহীদ হাদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফন করা হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ