
দেশচিন্তা ডেস্ক: শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন গঠনে দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের ‘ডেল ক্যারিয়ার ক্লাব’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘ক্যারিয়ার টক: ওয়ার্কশপ অন এক্সপ্লোরিং ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পাথস’। ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, বিকেল পৌনে ৩টায় এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর এস. এম. নছরুল কদির। কী-নোট স্পিকার ছিলেন বিশিষ্ট ব্যাংকার, উদ্যোক্তা এবং পরিবেশবিদ জনাব আমজাদ হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর এস. এম. নছরুল কদির আধুনিক ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে বলেন, বর্তমান বিশ্বের ব্যাংকিং ব্যবস্থা এখন আর কেবল গৎবাঁধা হিসেব-নিকেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন প্রযুক্তিনির্ভর এবং স্মার্ট কমিউনিকেশনের জায়গা। তাই ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষাগত দক্ষতা ও স্মার্টনেস কাজে লাগিয়ে এই খাতে ভালো করার প্রচুর সুযোগ রাখে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী কী-নোট স্পিকার জনাব আমজাদ হোসেন দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ব্যাংকে জুনিয়র পদ থেকে শুরু করে কীভাবে শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন, সেই অভিজ্ঞতার গল্প শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শেয়ার করেন। নিজের বক্তব্যে তিনি বর্তমান ব্যাংকিং খাতে প্রযুক্তির বিপ্লব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যাংকিং পরিষেবাকে অনেক বেশি দ্রুত ও নির্ভুল করে তুলছে। তবে প্রযুক্তির এই দাপটের মধ্যেও মানুষের সৃজনশীলতা ও মানবিক যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। পেশা নির্বাচনের দর্শন সম্পর্কে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পেশা নির্বাচনে কেবল অর্থের দিকে তাকালে চলবে না, সেখানে নিজের সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ থাকতে হবে। কর্ম ও মননের মধ্যে যদি মিল না থাকে, তবে সেই কাজে কখনোই সফলতা আসে না। আর কাজে যদি আনন্দ না থাকে, তবে তা মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও বিষণ্নতা ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই নিজেকে ভালোবেসে নিজের পছন্দের পেশাটিই বেছে নেওয়া উচিত।
কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে সাহিত্যের সঙ্গে অর্থনীতির এক ভিন্নধর্মী মেলবন্ধন ঘটান। তিনি কালজয়ী সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বিভিন্ন নাটকে কীভাবে তৎকালীন আর্থিক লেনদেন এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে, সেদিকে দৃষ্টিপাত করেন।
ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ জসীম উদ্দীন তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা সচরাচর মনে করে তাদের ক্যারিয়ার শুধু শিক্ষকতা বা বিসিএস-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু জনাব আমজাদ হোসেনের মতো একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি ইংরেজি বিভাগ থেকে পাস করে ব্যাংকিং জগতের উচ্চ পর্যায়ে কাজ করেছেন, তিনি আমাদের বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরণা। তিনি ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে এসে সময় দেওয়ার জন্য কী-নোট স্পিকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের ক্যারিয়ার ক্লাবের দুই সমন্বয়ক সহযোগী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং গাজী শাহাদাত হোসেন। তাঁরা জানান, শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামীতে আরও চাহিদাভিত্তিক এবং যুগোপযোগী পেশার ওপর এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মাননীয় উপাচার্য কী-নোট স্পিকার জনাব আমজাদ হোসেনের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক (ক্রেস্ট) তুলে দেন। পঞ্চম অর্ধবর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রভাষক মেহেদী রহমানসহ বিভাগের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।











