
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাস থেকে সীমান্ত ভৌমিক (১৯) নামে ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করছিলেন।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটক করে প্রক্টরিয়াল অফিসে দিয়ে যায়।
জানা গেছে, সীমান্ত ভৌমিকের বাড়ি খুলনা সদরে। বাবা বিপ্লব ভৌমিক ও মা ভারতী ভৌমিক।
শিক্ষার্থীরা জানায়, সীমান্ত ভৌমিক ২০২৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান করছেন। দক্ষিণ ক্যাম্পাসের আর.কে. টাওয়ারের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতো সে। কয়েকদিন ধরে সন্দেহজনক আচরণের কারণে তাকে নজরদারিতে রাখেন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠা কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে সন্দেহ আরও প্রবল হলে জিজ্ঞাসাবাদে সীমান্ত স্বীকার করে যে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। পরবর্তীতে তারা তাকে প্রক্টরিয়াল অফিসে নিয়ে যায়।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইখলাস বিন সুলতান বলেন, শুনেছি সীমান্ত আবার আরেকজনের কাছে টাকা চেয়েছে। কিছুদিন ধরে আচরণগত অসঙ্গতি ও বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার ঘটনায় সন্দেহ তৈরি হয়। আজ সকালে দেখা করে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়।
দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন সিয়াম বলেন, ২০২৪ সালে রেলক্রসিং এলাকায় সীমান্তের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। পরে দক্ষিণ ক্যাম্পাসে পাশাপাশি ভাড়া বাসায় থাকার সুবাদে তার সঙ্গে আমার একটা ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সে অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার নিত।
তিনি আরও বলেন, অনেকগুলো দোকান থেকে সে বাকি খেয়েছে। প্রায় সবগুলো দোকানের মালিক তার কাছে টাকা পাবে। সন্দেহজনক আচরণের কারণে আজ আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। সে মেরিন সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও বিভাগে কেউ তাকে চেনে না। তাই আমরা তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি।
আটক সীমান্ত ভৌমিক বলেন, আমার অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করার। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাও দিয়েছি তবে চান্স পাইনি। আমার বাবা মাসহ পরিবারের সবাই জানে যে আমি চবিতে পড়াশোনা করি।
তার ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন এ সময়টাতে সে বিভিন্ন দোকানদার ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোট ১৮ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন অনেক সচেতন। তাদের উদ্যোগেই দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী সেজে ঘুরে বেড়ানো সীমান্তকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, সে বহুজনের সঙ্গে লেনদেনে জড়িত। তাকে নিরাপত্তা দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক সপ্তাহ আগেও আরেক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল।















