আজ : বুধবার ║ ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বুধবার ║ ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেন করার দাবিতে মানববন্ধন

দেশচিন্তা ডেস্ক: কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে চট্টগ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়ার হাঁসের দিঘী ঢালায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা সবাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা ও একই পরিবারের সদস্য। নিহতদের মধ্যে ছিলেন, ব্যবসায়ী এনামুল হক পাটোয়ারীর স্ত্রী রুবি বেগম (৩৫), তার মা ও শাশুড়ি, বোন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ১৫তম ব্যাচের ছাত্রী সাদিয়া হক (২৪) এবং শ্যালিকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা লিজা (২২)।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে বিকেলে নগরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে ‘চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান মানববন্ধনে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নীত করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। এখন এই মহাসড়কটি মৃত্যুর জনপদে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এই সড়কের কোথাও না কোথাও ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে- সংবাদপত্র খুললেই তার প্রমাণ মেলে। আমরা এই পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না। বারবার অনুরোধ ও দাবি জানিয়েও এখনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। তাই আমরা আবারও জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নীত করতে হবে।

তিনি বলেন, এই সড়ক শুধু চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষের নয়; এটি দেশের অর্থনীতি, পর্যটন এবং মানবিক কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ কক্সবাজারে যাতায়াত করেন। মাদারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম, রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও ওষুধ- সবকিছুই এই সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। বিগত সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ দাবিটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। ইতোমধ্যে ছয় লেনের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বক্তারা বলেন, মহাসড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কটি অনেক জায়গায় পাড়ার গলির চেয়েও সরু। জাঙ্গালিয়ার মতো কিছু অংশ ঢালু ও আঁকাবাঁকা। আবার রাতে লবণের গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। প্রতিটি দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সড়ক প্রশস্ত করার আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মিনহাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, পরিষদের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান, কে. মাহমুদ ফয়সাল, আইনজীবী জিয়াউর রহমান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঈদগাঁও ফোরামের সভাপতি ঈয়াছিন আরফাত প্রমুখ।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান, গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, হাজী ইসহাক চৌধুরী, হামিদুল হক মান্না, মো. মোরাদ, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ঈদগাঁও ফোরামের জয়নাল আবেদিন, চট্টগ্রামস্থ ইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্র ফোরামের সভাপতি মুসা ইব্রাহিম রাজিব, তৌফিক মাহবুব, হাসনাইন মাবরুর জিমাম ও মো. তাওসীফসহ অনেকে।

প্রসঙ্গত, এর আগে একই দাবিতে গত ৬ এপ্রিল নগরীর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর ১১ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছেও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। তবে এতদিনেও বাস্তব কোনো পদক্ষেপ না থাকায় এলাকাবাসী পুনরায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ